যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলে তাকে দেয়া প্রবাসীদের নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেসময় হোটেলের বাইরে জটলা পাকিয়েছিলেন বিএনপি-জামায়াতের একদল সমর্থক। তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে চাইছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের আলোচনার জন্য আহ্বান জানালে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান বিএনপি-জামায়াতের ওই সমর্থকরা।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। খবর বাসসের।
পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করার পরই তারা হোটেলের বাইরে তাদের অবস্থান ত্যাগ করে।’
বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অর্থনৈতিক সংস্থাটির এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৮ এপ্রিল শেখ হাসিনা ওয়াশিংটনে পৌঁছান। বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার পর মঙ্গলবার প্রবাসীদের এই নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার সময় প্রধানমন্ত্রী হোটেলের বাইরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও বৃষ্টির মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের একটি গ্রুপকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখতে পেয়ে তিনি তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেন- তারা যা বলতে চায়, এখানে এসে তাদের তা বলতে দাও।’
বিক্ষোভকারীদের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর পিএস-২ এবং সেখানকার বাংলাদেশ মিশনের আরও একজন কর্মকর্তা তাদের হোটেলে আমন্ত্রণ জানাতে যান। কিন্তু তখন সেখানে আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
পরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।’
তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘এই চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারও উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যেন আর কখনোই ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন।’
অনুষ্ঠান মঞ্চে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।