বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্যাংশনকে আমরা ভয় পাই না। কাজেই হুমকি-ধামকি দেবেন না।

বুধবার (১৭ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উপলক্ষে ওই সভার আয়োজন করা হয়। ১৯৮১ সালের আজকের দিনে দেশে ফিরেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাবেক, মোশাররফ সাহেব, আমরা জানি এখন কোথায় তাকিয়ে আছেন। কখন স্যাংশন আসে! ইউ আর রং মিস্টার ফখরুল, মিস্টার মোশাররফ। আমাদের শক্তি জনগণ। ওই স্যাংশনকে আমরা ভয় পাই না। কাজেই হুমকি-ধামকি দেবেন না।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আপনাদের মনে চাইলে আসবেন। ইলেকশন হতে দেবেন না, এটা কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি? এত বড় আস্ফালন পেলেন কোথায়?

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দল যারা করবে, দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে। এটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি না। এটা বঙ্গবন্ধুর দল, শেখ হাসিনার দল। এখানে পাল্টাপাল্টি চলবে না। আমরা পাল্টাপাল্টিতে নেই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা শান্তির সমাবেশ করি, শেখ হাসিনার নির্দেশে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ ঐতিহাসিক ১৭ই মে। আমাদের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। আমাদের ইতিহাসে বাক পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণ। আমাদের ইতিহাসের মোড় পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাইলফলকের নাম ১৭ই মে। শেখ হাসিনা, আপনাকে আজ জাতির পক্ষ থেকে স্যালুট জানাতে চাই।

বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব, মোশাররফ সাহেব ঘরে আর ফিরবেন না, কাকে হটিয়ে? কমিউনিটি ক্লিনিক হটিয়েছেন। এই কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃতি দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই কমিউনিটি ক্লিনিক তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এ দেশের মানুষের জন্য।

এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ সহায়তা বাংলাদেশকে দিয়েছে। খালি হাতে ফেরেননি। আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা আছে, তাই আমরা ঋণ সহায়তা দিয়েছি। আইএমএফ প্রধান বাংলাদেশের প্রশংসাও করেছে।

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব লজ্জা করে না? ব্রিটেনে নাকি বৈঠক হয়? ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকই বলেছেন, আমরা শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করছি। তিনি আমাদের প্রেরণা। জননী জন্মভূমির একটি মহল বারেবারে তার ভালো কাজের সমালোচনা করে। বিএনপির নেতাগুলোর মন ছোট। বাংলাদেশের বড় অর্জনের প্রশংসা করতে তারা জানে না। ফখরুলরা, আমির খসরা বাংলাদেশ বিদেশে যে সম্মান পায়, তা বলতে ভুলে যায়।

বিএনপির আর আশা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলন তো! পথ হারিয়ে পদযাত্রা। লোকে বলে পতন যাত্রা। মানুষ বলে পতন যাত্রা। বিএনপির আর আশা নাই। পাবলিক নাই। পাবলিক না থাকলে কীসের আন্দোলন।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আর নাকি ঘরে ফিরবে না। আমরাও দেখব কই থাকে। ফখরুল উত্তরায় থাকত, এখন গুলশানে আসছে। এসে গেছে সব একসাথে লড়াই করবে! লাভ নাই। পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। যে আগুন হাতে নিয়েছেন, ওই আগুনে আপনাদের হাত পুড়িয়ে দেব।

বিএনপির গোপন বৈঠক হচ্ছে, টাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির শক্তি এ দেশের জনগণ। কর্মীরা জীবন দেবে, তবুও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ রক্ষা করবে।

বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা-বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীরা একটু তাকিয়ে দেখুন- বঙ্গবন্ধুর জীবন, শেখ হাসিনার জীবন। কোনো অপবাদ কেউ প্রমাণ করতে পেরেছে? কষ্ট করে, সংগ্রাম করে তারা মানুষের জন্য কাজ করেছে। আমাদের যেকোনো মূল্যে দেশের মানুষকে খুশি করতে হবে।

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। আক্রান্ত হলে কাউকে ছাড়ব না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, সুজিত রায় নন্দি; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।