• বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

নিখোঁজ এমপি আনোয়ারুল আজিমের ‘লাশ’ কলকাতা থেকে উদ্ধার

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ৭০
বুধবার, ২২ মে, ২০২৪
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

গত ১২ মে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। নদীয়া সীমান্ত অতিক্রম করার পর সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরাহনগর থানার ১৭/৩ মন্ডলপাড়া লেনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান। পরদিন দুপুর ১টা ৪০ নাগাদ ওই বাড়ি থেকে কিছুটা হেঁটে বিধানপার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে গিয়ে একটি গাড়িতে উঠেন। ওই সময় তিনি হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। সেই দৃশ্য দেখেছেন গোপাল বিশ্বাসের পরিচিত শুভজিৎ মান্না।
 
তবে সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ম্যাসেজ আসে, ‌তিনি (এমপি আনার) রাতে ফিরছেন না, দিল্লি যাচ্ছেন। এ সময় যাতে তাকে আর ফোন না করা হয়। তিনি দিল্লি পৌঁছে নিজেই ফোন করবেন- এমনটাও ম্যাসেজে লেখা ছিল।
এরপর আনারকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। তিন দিন পর ১৫ মে সকাল সোয়া ১১টায় তিনি শেষ ম্যাসেজে জানান, দিল্লি পৌঁছে গেছেন। তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন।
কলকাতার বরাহনগর থানায় ১৮ মে লিখিত মিসিং ডায়েরিতে এসব তথ্য উল্লেখ করেন ভারতে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।

এর আগে ভারতে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এই সংসদ সদস্যের। রোববার (১৯  মে) পরিবারের পক্ষ থেকে তিনদিন ধরে এমপির সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে অভিহিত করা হয়।

সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ জানান, গত ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর তিন দিন পার হলেও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। তিনি আরও জানান, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়টি তদারকি করছে।

মো. আনোয়ারুল আজিম আনারের জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে। পেশায় ব্যবসায়ী আনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে তিনবার (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) নির্বাচিত সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং এক সময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়াড়। ছাত্রজীবনে আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফুটবলে তার নেতৃত্বাধীন দল কালীগঞ্জ সরকারি ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ছাত্রজীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। স্থানীয় পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচন দিয়ে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। এর আগে বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও তিনি জয়ের ব্যবধান দিয়ে একই জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।

সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় কখনও তাকে পুলিশি প্রটোকল ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। তিনি নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে দিন অথবা রাতে যখন প্রয়োজন তখনই নির্বাচনি এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের যে কোনও গ্রামে পৌঁছে যেতেন।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন