• বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

মালিকানা বদলের পর সংকটে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো : সিপিডি

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ১১৫
বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪
রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

মালিকানা বদলের পর থেকে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ ধারার ব্যাংকগুলোয় নানা অনিয়মের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘What lies ahead for banking sector in bangladesh?’ শীর্ষক এক সেমিনারে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ কথা জানান।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, বেশিরভাগ ব্যাংক তথ্য প্রকাশ করে না। যেসব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে তা কতটুকু সত্য তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোয় ব্যাপক অনিয়মের কারণে সব সূচকে অবনতি হয়েছে। মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার বছরের পর বছর টাকা দিয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি সরকারি ব্যাংকগলোকেও ব্যাপক সহযোগিতা দিয়েছে সরকার। এরপরেও ব্যাংকগুলো তাদের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে পারছে না, আরও খারাপ হচ্ছে।

বিকল্প না থাকায় সাধারণ মানুষ ব্যাংক খাতের উপর আস্থা রাখছে। তবে আর্থিক অবস্থা ব্যাপকভাবে খারাপ হওয়ায় খাতটির উপর গ্রাহকদের আস্থা কমছে বলেও মনে করছে সিপিডি।

তিনি বলেন, ২০১২ সালের জুন মাস থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খাতে ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ২০২২ সালে ডিসেম্বর প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী ব্যাংক থেকে খেলা দিন ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। ওই সময়ে অবলোকনকৃত ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। আর কোন তফসিল্কিত ঋণ ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পরিমাণ রয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এর বাইরেও মামলায় আটকে থাকা এক লাখ ৭৮ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা ফেরত আশা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, সম্প্রতি ব্যাংকগুলো তাদের মুনাফা দেখিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির কারণে ব্যাংক হাতের বিনিয়োগ কমেছে। এজন্য তারা সরকারি বিভিন্ন বিলবণ্ডে বিনিয়োগ করে মুনাফা দেখাচ্ছে। ব্যাংক যদি খেলাপি ঋণ তুলতে না পারে তখন তারা লোকসানে পড়ে। ওই সময় যদি সুদের হার বাড়তে থাকে তাহলে ব্যাংকগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। এতে ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়ে। সিপিডির এই শীর্ষ কর্তা বলেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য বেড়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের ক্যাশ হোল্ডিংস কমেছে। এজন্য ব্যাংকগুলো টাকা সংকটে ভুগছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে ক্রমান্বয়ে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সুশাসন জবাবদিহিতার অভাব। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের স্বাধীন সত্তা হারিয়েছে। এ কারণে ব্যাংক হাত ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এই উদ্যোগ যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে নেওয়া হয়েছে কিনা? সেটিও দেখার বিষয়। ব্যাংক একীভূতকরণ চাপিয়ে দেওয়ার কোনো বিষয় না। সবার আগে ব্যাংকগুলোর সঠিক আর্থিক অবস্থা নির্ধারণ করতে হবে। এরপর সেই দুর্বল ব্যাংক কেউ কিনবে কিনা সেটা দেখা উচিত। খারাপ ব্যাংকের পরিচালকেরা ৫ বছর পর আবার ফিরতে পারবে। তাদের শাস্তি দেওয়ার পরবর্তীতে পুরস্কার দেওয়ার নিয়ম হয়ে গেল।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন