প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী নওগাঁর বাগানগুলো থেকে গুটি আম পাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে জেলার আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ।
বুধবার থেকে জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আম পাড়া শুরু হয়।
তবে চাষিরা বলছেন, জেলার বাগানগুলোতে এবার ফলন কম হওয়ার আমের দাম বাড়তে পারে।
এদিকে, জাতভেদে গাছ থেকে আম নামানোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, এরপর ৩০ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে ক্ষিরসাপাত ও হিমসাগর, ৫ জুন থেকে নাক ফজলি, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও হাড়িভাঙা, ২০ জুন থেকে আম্রপালি, ২৫ জুন থেকে ফজলি এবং আগামী ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, বারি-৪, বারি-১১, গৌড়মতি ও কাটিমন আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
গুটি আম পাড়া শুরু হলেও উন্নতজাতের আম বাজারে আসবে আরো কিছুদিন পর।
এ বছর জেলা থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
এছাড়াও এ বছর ৫০০ হাজার টন আম বিদেশে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে- এ বছর জেলার ৩৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ হয়েছে। এসব বাগানে ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি আমসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ১৬ জাতের আম চাষ করেছেন চাষিরা। নওগাঁ থেকে এ বছর অন্তত ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি অফিস।
জেলার পোরশা উপজেলার নিতপুর সদরের আম চাষি এনামুল হক জানান, এ বছর মুকুল আসার সময় বৃষ্টিপাতের কারণে আমের গুটি খুব কম এসেছে।
এছাড়া তাপদাহের কারণে অর্ধেক আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। এ অবস্থায় আমের ফলন এবার অনেক কম হবে।
মহাদেবপুরের আম চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর আমের ফলন কম। তবে সাইজ ভালো। ভালো দাম পেলে ফলনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হওয়া যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, বুধবার থেকে স্থানীয় গুটি জাতের আম পাড়া তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া ছিল। সেই সময় অনুযায়ী চাষিরা গুটি আম গাছ থেকে পাড়ছেন। এছাড়াও উন্নত জাতের যেসব আম আছে সেগুলো বাজারে আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
তিনি বলেন, “পরিপক্ব ও ক্ষতিকারক কেমিক্যাল উপাদানমুক্ত আম নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
তবে নির্ধারিত সময়ের আগে যদি কোনো বাগানের আম পেকে যায় তাবে চাষিরা সেগুলো নামাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগকে জানাতে হবে।