বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপ এখন ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হয়েছে। এরপর রোববার (২৬ মে) সকালে এটি পরিণত হয়েছে গভীর ঘূর্ণিঝড়ে। এ ছাড়া মধ্যরাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাব শুরু হয়েছে। ফলে প্রতিকূল আবহাওয়ায় ২১ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। এতে বাতিল হয়েছে প্রায় ৪০০ ফ্লাইট। রোববার (২৬ মে) ইকোনমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে ভারতীয় সময় রোববার দুপুর ১২টা থেকে ২১ ঘণ্টা কলকাতা বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হবে। এ সময়ে কোনো ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা করবে না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে ব্যাপক সতর্কতার অংশ হিসেবে রোববার দুপুর থেকে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে এ সময়ে ৩৯৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এরমধ্যে ২৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ার কারণে ৬৩ হাজার যাত্রীর চলাচল ব্যাহত হবে।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, বাতিল হওয়া ফ্লাইটের যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে কোনো যাত্রী ফেরত নিতে না চাইলে পরবর্তী ফ্লাইটে তাদের ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা চালাবে এয়ারলাইন্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ায় বিপদ এড়াতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। মাঝ আকাশে তীব্র ঝাঁকুনির কবলে পড়ায় ওই ফ্লাইটের এক যাত্রী নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও অন্তত ৩০ যাত্রী।
জানা গেছে, উপকূল থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল, যা আরও অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। যার ফলে দেশের সমুদ্রবন্দর ও উপকূলীয় জেলাগুলোতে সতর্কসংকেত দেওয়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে রোববার (২৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে কেন্দ্র অতিক্রম করবে। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়। এর কেন্দ্র রাত ১২টায় উপকূল অতিক্রম করবে, পেছনের অংশ পার হতে রাত ৩টা বেজে যাবে। স্থলে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা তাণ্ডব চালাতে পারে।
এদিকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঝড়টি সকালে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
রিমালের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরেও ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া এক বিশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে কক্সবাজার রুটের সব ধরনের বিমানের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নৌপথের সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়ছে।