
ট্রেন্ড ভাঙলেন রাধিকা মার্চেন্ট। বিয়েয়ে সাজতে ভারতের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার মনীষ মালহোত্রা কিংবা সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়কে বেছে নেননি তিনি। বরং অন্য ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাকে নিজেকে বধূ বেশে সাজিয়েছেন। শুধু রাধিকাই নন, শ্বাশুড়ি নীতা আম্বানিও ছেলের বিয়ের আসরে সেজেছিলেন সে ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাকেই। আপনি কি জানতে চান, সে ফ্যাশন ডিজাইনারের পরিচয়!
ভারতের সেলিব্রেটি ও ধনী ব্যক্তিদের রাজকীয় বিয়ে মানেই বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার মনীষ মালহোত্রা নয়তো সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের পোশাক। এ দুই বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাক বিয়েতে প্রাধান্য দিতে দেখা গেছে বিদ্যা বালান, আনুশকা শর্মা, দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, পত্রলেখা রাও, ক্যাটরিনা কাইফ, কিয়ারা আদভানি, আলিয়া ভাটসহ অনেক সেলিব্রেটিকে।
কিন্তু আম্বানি পরিবারের পুত্রবধূ রাধিকা তার বিয়েতে পরেছেন ফ্যাশন হাউস আবু জানি ও সন্দীপ খোসলার ডিজাইন করা পোশাক। এ প্রতিষ্ঠানের সহ-মালিক সন্দীপ খোসলা।
সন্দীপ খোসলা নামটি অপরিচিত মনে হলেও দেবদাস সিনেমা নিশ্চয়ই কারও অপরিচিত নয়। বলিউডের বিখ্যাত পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত দেবদাস সিনেমায় পার্বতী চরিত্রে অভিনয় করা বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রায় ও চন্দ্রমুখী চরিত্রে অভিনয় করা বলিউড অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত যে পোশাকগুলো পরেছিলেন তার সবই ডিজাইন করেছিলেন সন্দীপ। ‘দেবদাস’ সিনেমায় ফ্যাশন ডিজাইনারের দায়িত্ব পালন করায় সন্দীপ শ্রেষ্ঠ পোশাকশিল্পী হিসেবে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন।

ভারতের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার আবু জানি (বামে) ও সন্দীপ খোসলা ( ডানে)
সন্দীপ তার ডিজাইনে মূলত ভারতীয় কারুশিল্প এবং টেক্সটাইল ঐতিহ্যকে সংমিশ্রণ করার চেষ্টা করেন। আধুনিক নকশার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নান্দনিকতাকে দক্ষভাবে একত্রিত করায় ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে খুবই পরিচিত একটি নাম সন্দীপ।
রাধিকার বিয়ের পোশাক তৈরির দায়িত্ব আম্বানি পরিবার তার কাছে দিলে সন্দীপ তার জন্য তৈরি করেন গুজরাটের ঐতিহ্যবাহী ‘পানেটর’ লেহেঙ্গা। সাদার শুভ্রতায় সামান্য লাল রঙের ছটার রাজকীয় ডিজাইনের লেহেঙ্গা নজর কাড়ে সবার। ফ্যাশন দুনিয়াতেও ঝড় তুলেছে রাধিকার বিয়ের সাজ ও তার পোশাক।
বিয়েতে পরা রাধিকার পুরো পোশাকে ছিল ভরাট জারদৌসি কাজ। পোশাকের সঙ্গে ছিল ম্যাচিং ওড়না। গলায় পরেছিলেন জোড়োয়ার চোকার আর হীরা পান্নার মিশেলে তৈরি পাঁচ লহরি হার। সঙ্গে ছিল ম্যাচিং টিকলি, কানের ঝুমকো, রতনচুর, হীরার চুরি। চুল খোপা করেছিলেন। কপালে পরেছিলেন ছোট্ট টিপ।
হালকা মেকআপেই এ সময় অসাধারণ লাগছিল রাধিকা মার্চেন্টকে। বধূবেশে তৈরি হওয়ার পর বেশ কয়েকটি ছবি তোলেন রাধিকা। নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে রাধিকার বিয়ের পোশাকের ছবি।
ময়ূরের সামনে বসে রানির বেশে পোজ দেয়া রাধিকার ছবি পছন্দ করেছেন নেটিজেনরা। সাজ-সজ্জার প্রশংসার পাশাপাশি অনেকেই নববধূকে জানিয়েছেন বিয়ের শুভেচ্ছাও।
শুক্রবার ( ১২ জুলাই) গুজরাটি রীতি মেনে অনন্ত আম্বানির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রাধিকা মার্চেন্ট। দীর্ঘ সময়ের প্রাক বিয়ের অনুষ্ঠানের পর অবশেষে চার হাত এক হয় তাদের।
অনন্ত ও রাধিকার মহাবিবাহ অনুষ্ঠানের পর আজ শনিবার (১৩ জুলাই) শুভ আশীর্বাদ এবং আগামী রোববার (১৪ জুলাই) হবে জমকালো বিবাহোত্তর সংবর্ধনা বা মঙ্গল উৎসব।