প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে। এতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এমন উদাহরণ দিতে গিয়ে নিজ বাসার সাবেক এক কর্মীর দুর্নীতি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করে গেছে পিয়ন, যে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। হ্যাঁ, এটা বাস্তব কথা। তো কী করে বানালো এই টাকা! যখনই আমি জেনেছি তাকে বাদ দিয়ে কার্ড-টার্ড সব সিজ করে আমার ব্যবস্থা আমি নিয়েছি। ধরা পড়লে তো চোখে আসে। তা ছাড়াতো হয় না। যখন ধরা পড়ে তখন ব্যবস্থা নিই।’
প্রধানমন্ত্রীর এই তথ্যের পরই শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। কে এই আলোচিত ৪০০ কোটির পিয়ন, যিনি হেলিকপ্টার ছাড়া চলেন না। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার পরিচয় নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেওয়া না হলেও বিভিন্ন অনুসন্ধানে মিলেছে সেই পিয়নের তথ্য।
দরিদ্র বাবার সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ নির্বাচনও করতে চেয়েছিলেন। মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনকে দান করতেন অকাতরে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেকে জানান, একসময় তাদের পরিবার ছিল খুবই দরিদ্র। বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলম অঢেল সম্পদ ও টাকার মালিক। এসবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে।
এলাকার অনেকে জানান, জাহাঙ্গীর বলতেন তার সঙ্গে অনেক মন্ত্রী ও দলীয় অনেক নেতার সখ্যতা রয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অনেক মন্ত্রী বা দলীয় নেতা তার দ্বারস্থ হতেন বলেও তিনি বলতেন।
তার বাবা রহমত উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদে কেরানী হিসেবে চাকরি করতেন। সংসারে ছিল টানাপোড়ন। দল ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর আলমের উত্থান অনেকের কাছে আলাদীনের চেরাগের মতো। চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় করেছেন চারতলা বাড়ি। বাড়ির পাশে রয়েছে ৭০০ শতক জমি। উপজেলার খিলপাড়া পূর্ব বাজারে রয়েছে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ। জেলা শহরের মাইজদীতে রয়েছে আটতলা বিলাসবহুল ভবন।
জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লিখে পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। তার ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে দেশের বাহিরে আছেন।
সারাদিনের সর্বশেষ খবর পেতে চোখ রাখুন ‘প্রতিদিন খবর’ ওয়েবসাইটে