• বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

ছারছীনা পীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ৯৪
বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪
বিদায় আমীরে হিযবুল্লাহ শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (রহ)
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত/মনোনীত পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের দায়িত্ব গ্রহণ, খুৎবা প্রদান ও দ্বিতীয় জানাযাঃ
শুক্রবার জুমার দিন। এক বর্গমাইলেরও বেশি এলাকা জুড়ে ছারছীনা মাদরাসা ও দরবার শরীফ এবং এর আশ পাশের গ্রাম্য এলাকা লোকে লোকারণ্য। দশ লক্ষাধিক মানুষের কান্নার আহাজারী, তাদের মুর্শিদ তাদেরকে এতিম করে চলে গেছেন জান্নাতে। বিশাল বিস্তৃত মাঠের সর্ব পশ্চিমে ডাক বাংলোর পশ্চিমে অবস্থিত বিশাল দীঘির ঘাটলার দক্ষিণ প্রান্তে রাখা হল হুজুর কেবলার কফিন মোবারক। জুমার নামায হবে বিশাল বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে, মাঠে, রাস্তায়, দালান বাড়ীর ছাদে, গ্রামবাসীর বাড়ীর আঙ্গিনায়, বিশাল এলাকা জুড়ে জনসমুদ্র। জুমার নামায পড়াবেন হুজুর কেবলার হাতে গড়া দীর্ঘদিন কাছে রেখে রেখে তা’লীম তাওয়াজ্জুহ দিয়ে মা’রেফতের উঁচুস্তরে সমাসীন করেছেন যাকে, সেই আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব দাঁড়ালেন খুৎবা পড়তে। ভিতরে তাঁর পিতৃহারা, মুর্শিদ হারা শোকের হুতাসন।
তবে কণ্ঠ স্থির, ভরাট ব্যক্তিত্বপূর্ণ- সকলে যখন তাকে দেখল আর স্থির থাকতে পারল না, হায় এ যে সেই মুর্শিদ কেবলারই ছবি, এ যেন তাঁরই কণ্ঠ। কান্নার রোল এক ভীষণ ভারী বিরামহীন শব্দের মালার মত গুঞ্জরিত হচ্ছে। নামায শেষ হল। এখনই হবে জানাযার নামায। এমন সময় মাইকে ভেসে আসল ছারছীনা
মাদরাসার মুহাদ্দিস হুজুর কেবলার স্নেহের আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুর রশীদ খান ছাহেবের কান্না
বিজড়িত কণ্ঠ। তিনি সকলকে উদ্দেশ্য করে মর্মস্পর্শী ভাষায় হুজুর কেবলার উচ্চ শান ও মাকামের উল্লেখ করে বললেন, এ মহান মুর্শিদ হারানোর শোকে আমাদের অস্থির হলে চলবেনা বরং ছবরে জামিল এখতিয়ার
করতে হবে। কারণ সকলকেই পর পারের ডাকে সাড়া দিয়ে একদিন চলে যেতে হবে। আমরা আমাদের মরহুম মুর্শিদ কেবলার আদর্শ বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকব।
এরূপ সান্ত্বনা ও উপদেশ মূলক বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে তিনি বললেন, পীর ছাহেব কেবলা (রহঃ) এর অসীয়ত মোতাবেক তাঁর ছোট ছাহেবজাদা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব তাঁর ওয়ালেদ ছাহেব কেবলা (রহঃ) এর অবর্তমানে ছারছীনা দরবার শরীফের পীর হবেন। আপনাদের মতামত কি? তখন উপস্থিত দশ লক্ষাধিক ভক্ত মুরীদান হাত তুলে প্রস্তাব সমর্থন করেন। এতে মুহ্যমানজন সমুদ্রে সামান্য সময়ের জন্য খুশীপরিলক্ষিত হল। সকলে আল্লাহুআকবার ধ্বনি দিলেন। এতক্ষণে যেনসকলে সন্বিত ফিরে পেয়েছে।
যাহোক এরপর ছারছীনা মাদরাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আযীযুর রহমান
কায়েদ ছাহেব হুজুর আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবকে সকলকে তাজদীদে বায়াত করার জন্য অনুরোধ জানান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ফুরফুরা শরীফের পীর হযরত মাওলানা
আবুল আনসার মোহাম্মদ আব্দুল কাহহার ছিদ্দিকী আল কোরাইশী হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ
মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবকে নিজ মাথার পাগড়ী তাঁর হাতে দিয়ে বললেন, “আপনি সকলকে বায়াত করিয়ে নিন।”
তখন হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব ছারছীনা দারুস্সুন্নাত আলিয়া মাদরাসার মোহাদ্দেসীন ও মোদার্রেসীনে কেরামসহ লক্ষ লক্ষ মুরীদানকে তাওবায়ে ইস্তেগফার করিয়ে তাজদীদে বায়াত করান। এরপর তিনি জনসমুদ্রকে লক্ষ্য করে সংক্ষিপ্ত অথচ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হৃদয়গ্রাহী এক খুৎবা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, আজকে আমার বলার কিছুই নেই। বিয়োগ ব্যাথার শোকে আমি মূহ্যমান। তিনি স্বজল চক্ষে বাস্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, “আমার উপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে এজন্য আপনারা সকলেই আমার সহযোগিতা করবেন। আমি আপনাদের খাদেম মাত্র। আমি যেন হযরত ওয়ালেদ ছাহেব কেবলা (রহঃ) ও হযরত দাদাজান কেবলা (রহঃ) এর হুবহু আদর্শ ও পথে মতে চলতে পারি এজন্য আপনারা আমাকে দোয়া করবেন ও পরামর্শ দিবেন।”
জানাজা শেষে তাকে তার ওয়ালেদ ছাহেব কেবলার পূর্ব পার্শ্বে সমাহিত করা হয়। আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব মহান পিতার আকস্মিক ইন্তেকালের শোক কাটিয়ে উঠে পিতার ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়েন কর্মক্ষেত্রে। প্রথমে তিনি মরহুম পীর কেবলাদ্বয়ের নির্মিত ইমারত সমূহের সংস্ড়্গার এবং সৌন্দর্য বিধানে হাত দেন। তারপর মহান পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে একেক প্রকল্প হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে শুরু করেন।
হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) দ্বিতল নেছার হল নির্মাণ করে গেছেন। ১৯৯০ইং সনে বর্তমান হযরত পীর ছাহেব কেবলা উক্ত নেছার হলকে তৃতীয় তলায় উন্নীত করেন। বর্তমান গদ্দীনশীন হযরত পীর ছাহেব কেবলা দ্বিতল মাদরাসা ভবনকে ১৯৯১ইং সনে ১৭২ী২৯ ফুট আয়তন বিশিষ্ট তৃতীয় তলায় উন্নীত করেন সাবেক স্থাপত্য শিল্প নমুনা বহাল রেখে।
একতলা ডাইনিং হলকে বর্তমান হযরত পীর শাহ্ মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ ছাহেব ১৯৯১ইং সনে ১২০ী২৯ ফুট আয়তন বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনে রূপান্তরিত করেন।
আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের আমলেই ১৯৯২ইং সনে ১১৫ী২৯ ফুট আয়তন বিশিষ্ট আই•ডি•বি• এর অর্থ সহায়তায় মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার একাডেমীক ভবন নির্মিত হয়।
বর্তমান গদ্দীনশীন পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব দ্বিতল মসজিদকে তৃতীয় তলায় রূপান্তরিত বর্তমানে 7 তালা বিশিষ্ট জামে মসজিদ নির্মাণ চলতেছে । ৪ তলা একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার আংশিক কাজ হযরত মাওলানা শাহ আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) সম্পন্ন করে গেছেন। সেই একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করে ৪র্থ তলার কাজও বর্তমান
পীর হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব একাডেমিক ভবনকে স্থাপত্য শিল্পের অতুøজ্জ্বল
নিদর্শন হিসেবে রূপ দিয়েছেন। উক্ত ভবনের ৪র্থ তলাকে অডিটরিয়াম কাম পরীক্ষার হল হিসেবে রূপান্তর করেন।
হযরত মাওলানা শাহ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ) যে হাফেজী মাদরাসার দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে গিয়েছিলেন উক্ত ভবনে ফাটল ধরায় তাহা ভেঙ্গে বর্তমান পীর ছাহেব কেবলা হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ১৯৯৬ইং সনে ৪৭ী২৪ ফুট আয়তন বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ করেন।
শাহ্ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ•) ও হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ)-এর স্বপ্ন ও আকাঙ্খা বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের স্বীয় পিতা তথা মুর্শিদের মত অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলেছেন
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে।
হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) ছাত্রাবাসের স্থান সঙ্কুলনের জন্য যে ইউ প্যাটার্নের ১২০ী৩০ ফুট আয়তন বিশিষ্ট ৭টি ৬তলা ভবন নির্মাণ করার প্লান ইস্টেমেট করে গেছেন
উক্ত প্লান অনুযায়ী আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে ৫টি ভবনের নির্মাণ কাজ ১৯৯৯ইং সনে শুরু হয়ে বর্তমানে প্রায় সমাপ্তির পথে।
উল্লেখ্য যে, হুজুর কেবলা মজবুতির জন্য ভবনগুলো ৫০ ফুট নীচ থেকে রড পাথরের পীলার স্থাপন করে নতুন ভবন গুলো নির্মাণ করেছেন। এতে করে নির্মাণ খরচের মাত্রা অনেক গুণে বেড়ে গেছে। তাছাড়া নব
নির্মিত ৬ তলা ভবনের সৌন্দর্য বিধানে এবং এর স্থায়িত্ব রক্ষায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে দর্শনীয়
ভবনে পরিণত করেছেন।
আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের নির্মিত ৭৬ী৫৩ ফুট আয়তন বিশিষ্ট ৪তলা কমপ্লে ভবনটি অত্যন্ত মনোরম আঙ্গিকে নির্মিত। ভবনটির স্থাপত্য শিল্পকুশলী এতই মনোরম যে উহা দর্শনে কোন দর্শকই বিমোহিত না হয়ে পারেন না। উক্ত ভবনটির নির্মাণ কাজ ২০০৩ইং সনে শুরু হয়।
শুধু তাই নয়; মাহফিলে আগত মেহমানদের রোজ দু’বেলা খাওয়ানোর জন্য রান্না-বান্না ও খাবার পরিবেশনের জন্য যে স্থান নির্ধারিত ছিল উহাতে সংকুলান না হওয়ায় হুজুর কেবলার নিজস্ব বাগান বাড়ীর গাছ-পালা কেটে ডোবা নালা জলাভূমি ভরাট করে এ কাজের জন্য নতুন এক এলাকা সৃষ্টি করেন।
রান্না-বান্না কাজের নিমিত্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকজনের আবাসিক ব্যবস্থার জন্য এবং মালামাল সংরক্ষণের জন্য একটি বৃহদাকার টিনের ঘর নির্মাণ করেন।
বালু দিয়ে দীঘি দু’টো ভরাট করতে এবং খাওয়ার মাঠ সম্প্রসারণের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করতে
হয়েছে। দীঘি দু’টো ভরাট করার ফলে সৃষ্ট অসুবিধা অর্থাৎ বিপুল সংখ্যক ছাত্র শিক্ষক ও দরবারের লোক জনের অজু গোছলের নিমিত্ত হুজুর কেবলা দুইটি বিশাল আকারে পানির হাউস তথা কৃত্রিম পুকুর নির্মাণ করেন।
দীনি কাজ পরিচালনার জন্য ৪তলা কমপ্লে ভবনের নীচতলায় উক্ত কৃত্রিম পুকুর নির্মাণ করেন। চতুর্দিকে অজু গোছলের আরামদায়ক মনোরম পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে ২০০৩ইং সনে।
২০০৪ইং সনে ১৩৫ী২৯ ফুট আয়তন বিশিষ্ট পুরাতন একতলা বোর্ডিং ভেঙ্গে মনোরম কারুকার্য বিশিষ্ট দ্বিতল সূফী ফতেহ আলী হল নির্মাণ বর্তমান পীর শাহ মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ ছাহেবের আর এক অনন্য অবদান।
ছাত্রদের বোর্ডিং এ স্থান সঙ্কুলন না হওয়ায় বোর্ডিং এর পূর্ব দিকে উত্তর ভিটিতে ২০০৪ইং সনে ৬৩ ফুট দৈর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রস্থ টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়।
প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার ছাত্রের ২ বেলা খাবার পরিবেশনের নিমিত্ত রান্না-বান্না করার দায়িত্বে নিয়োজিত বাবুর্চি ও অন্যান্য কর্মচারীদের আবাসিক ব্যবস্থা টিনের ঘরের পরিবর্তে তাদের জন্য স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থাকল্পে বর্তমান পীর শাহ মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ ছাহেব ২০০৪ইং সনে ৬৪ী২৩ ফুট আয়তন বিশিষ্ট বাবুর্চিদের দ্বিতল ডরমিটরী বিল্ডিং নির্মাণ করেন।
মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে পূর্বের তুলনায় অত্যাধিক লোক সমাগম হওয়ায় মাহফিলের প্যান্ডেল বৃদ্ধি
করা তথা মাঠ সম্প্রসারণ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। ফলে বর্তমান গদ্দীনশীন পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব বাধ্য হয়েই হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ•) এর খননকৃত ৫০র্০ী৪০র্০ ও ৩০র্০ী২০র্০ ফুট আয়তন বিশিষ্ট দীঘি দু’টো ২০০৫ইং সনে ভরাট করে মাঠ সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করেন।
পুরাতন কুতুবখানা মরহুম হুজুর কেবলা পুনঃ নির্মাণ করে গেলেও উহার সব কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। উক্ত ভবনের ফোলর পাকা করণ, টাইলস দ্বারা আচ্ছাদিত করা, গ্রীল লাগানো, দরজা-জানালা সেট করে বর্তমান হুজুর কেবলা উহার রক্ষণা বেক্ষণের ব্যবস্থা করে কিতাবাদী সংরক্ষণ ও গবেষণাগার হিসেবে রূপান্তর করেন ২০০৬ইং সনে ।
আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের অন্য একটি প্রকল্প দেখে সবাই বিস্মিত । এ প্রকল্পটি হচ্ছে পানি সমস্যা তথা অজু গোছলের সমস্যা দূরী করণের জন্য কমপ্লে ভবনের নীচ তলায় যে কৃত্রিম পুকুর নির্মাণ করেছেন তারই অনুকরণে হযরত পীর ছাহেব কেবলা পুরাতন রিজার্ভ পুকুরকে এক অভিনব কায়দায় এক কৃত্রিম পুকুর নির্মাণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, যাতে করে সমস্ত ছাত্র শিক্ষক বিশেষ করে বছরে দু’টো মাহফিলে আগত লক্ষ লক্ষ লোক অজু গোছলের কাজ সমাধান করতে পারেন। উক্ত প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০০৬ইং সনে। উল্লেখ্য যে, প্রথম রিজার্ভ পুকুর খনন করা হয় ১৯৩৯ইং সনে।
আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবেরbআমলে ২০০৭ই সনে ৫৫ী৩৩ ফুট আয়তন বিশিষ্ট নতুন টিনশেড গোডাউন ভবন নির্মাণ করে মালামাল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন।
আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব সরকারী অর্থ ছাড়াই ভক্ত মুরীদানদের
স্বেচ্ছা প্রনোদিত দানে তিনি এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
শাহ্ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ•) একবার বলেছিলেন, “এখানে আরো কত কিছু হবে।” সে কথাই যেন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। বর্তমান হুজুর কেবলা একের পর এক প্রকল্প হাতে নিয়ে
সম্পাদনের পথে এগিয়ে চলেছেন অসীম সাহসিকতায়। আল্লাহ পাকের ওপর ভরসা রেখে তিনি মাদরাসার
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
মাহফিলে আগত মেহমানদের থাকার সুব্যবস্থা করণার্থে মেহমানদের জন্য ২০০৮ইং সনে প্রতিষ্ঠা করেছেন এক ভিন্ন মেহমানখানা।
ঈছালে ছওয়াব ও মাদরাসার মালামাল সংরক্ষণের জন্য ২০০৯ইং সনে ৩৬ী৩২ ফুট আয়তন বিশিষ্ট চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
মাঠ সম্প্রসারণের ফলে পুরাতন ষ্টেইজের পরিবর্তে ৫ই জুলাই ২০১০ইং সনে ১২৯ী১২৬ ফুট আয়তন বিশিষ্ট নতুন ষ্টেইজ এর ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
বর্তমান গদ্দীনশীন পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব হযরত মাওলানা শাহ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ) হেদায়েত ও দীনের কাজে ব্যবহৃত পুরাতন কাঠের বডির বোট খানা ২০১০ইং সনে ষ্টিল বডিতে রূপান্তর করেন দীর্ঘ স্থায়ী করার মানসে।
তিনি আরো একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ২০১০ইং সন ৭০ী৫০ ফুট আয়তন বিশিষ্ট চার তলা মাকতাবায়ে
দারুস্সুন্নাত (কুতুবখানা/লাইব্রেরী) এর নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছেন ।
পুরাতন ডাকবাংলো অপসারণ উল্লেখ্য যে, পুরাতন ডাকবাংলো ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান সাহেবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও পিরোজপুর – ২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম সাহেবের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ৩১শে জানুয়ারি ২০১১ ইং সনে সরকারী সিদ্ধান্তে নিলামে বিক্রি করা হয়।
জামে মসজিদের নির্মাণাধীন মিনারা যার উচ্চতা হবে ৩০০ ফুট। উহার না নিম্নে প্রদর্শিত হল। উল্লেখ্য যে, মিনারার নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন ১৬-০২-২০১১ইং তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। যে দিন ছিল ১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)।
এছাড়া তিনি আরো একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, যা হল বার্ষিক মাহফিলে আগত বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম এবং খোলাফায়ে এজামদের নিমিত্ত মেহমানখানা নির্মাণ। প্রস্তাবিত মেহমান খানার না নিম্নে প্রদর্শিত হল। আরো কত প্রকল্প যে তার মন মুকুরে আছে তা আল্লাহ পাকই জানেন।
আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি তার অপ্রতিহত গতিশীল কর্মকাণ্ড। মুসাফিরখানা, লিল্লাহবোর্ডিং এর প্রায় তিন হাজার ছাত্রের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাপনা একটা দুরূহ ব্যাপার। শাহ্ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ•) আশা করেছিলেন, দু’হাজার ছাত্র বোর্ডিং-এ রেখে পড়াশুনা করার সুযোগ দানের। হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ•)-এর আমলে উক্ত ছাত্র সংখ্যা দেড় হাজারে উন্নীত হয়। আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের আমলে এসে শাহ্ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ•) এর স্বপ্ন, আশা, আকাঙ্খা বাস্তবে রূপ লাভ করে।
অত্যন্ত বিস্ময়ের ব্যাপার- ঝড় বাদলেও ছাত্রদের খানা পরিবেশনে কখনও সময়ের তারতম্য হয় নাই। বর্তমান হুজুর কেবলার আমলে বার্ষিক মাহফিলে লোক সমাগম অত্যাধিক বেড়ে গেছে। লক্ষ লক্ষ লোকের তিন দিনের দুই বেলা করে খাবার সুষ্ঠুভাবে পরিবেশন একটা অলৌকিক ব্যাপার বৈকি!
বার্ষিক তালীমী জলছার আঞ্জাম দিয়ে সারা বছর তাবলীগি সফরে ব্যস্ত থাকেন বর্তমান পীর ছাহেব কেবলা। তিনি যে তাবলীগি সফর শুধুমাত্র বাংলাদেশের মধ্যেই সীমিত রাখছেন তা নয় বরং দেশের বাইরেও বিভিন্ন স্থানে তাঁর এ দাওয়াতী প্রোগ্রাম পরিচালনা করছেন। তিনি যে নির্বিঘ্নে এসব কাজ করতে পারছেন তা নয়। তাকেও অকুসুমাস্তীর্ণ পথে অগ্রসর হতে হচ্ছে।
ইসলাম বিদ্বেষী, স্বার্থান্বেষী, কুচক্রী মহলের দ্বারা বিভিন্ন ব্যাপারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। বিব্রতকর অবস্থায় তাকে মাঝে মাঝে পড়তে হয়। আল্লাহ পাকের অপার করুণায় শাহ্ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ) এবং হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) এর দোয়ার বরকতে সকল বাধা বিপত্তি সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করে তিনি এগিয়ে চলছেন মাদরাসার উন্নয়ন, দরবার ও ছেলছেলার আদর্শ রক্ষার কাজে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যাচ্ছে যে,
শাহ সূফী হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ•) এর প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় ১৯২৬ইং সনে বিভাগীয় ইন্সপেক্টর পরিদর্শনে এসে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, আপনার মাদরাসাটি নিউ স্কীম মাদরাসা করলে মাদরাসার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সরকারী সাহায্য সহযোগীতা করা যাবে। ওল্ড স্কীম মাদরাসার জন্য সাহায্য দেয়ার গভর্নমেন্টের কোন কানুন নেই। হযরত পীর ছাহেব কেবলা এর উত্তরে বলেছিলেন, নিউ স্কীম মাদরাসা ও হাই স্কুল এ জেলায় অনেক আছে। আমি কতক লোককে হাদীস কোরআন ও দীনি ইলম শিক্ষা দিয়ে তাদেরকে আমলে আখলাকে সীরাতে সুরাতে রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মোজাচ্ছাম নমুনায় একদল নায়েবে নবী তথা অভিজ্ঞ মোহাক্কেক আলেম, মোবাল্লেগ, মুফতি, আহলে সুন্নাত ওয়াল
জামাতের আকিদায় বিশ্বাসী ও অভ্যস্ত শ্রদ্ধাভাজন হাদী তৈরী করার বাসনা নিয়ে মাদরাসা তৈরী করেছি। আপনাদের নিউ স্কীম মাদরাসার দ্বারা সে উদ্দেশ্য সাধিত হবে না। আপনাদের আইনে যদি এরূপ মাদরাসায় সাহায্য দেয়ার ব্যবস্থা না থাকে তবে আমার আল্লাহ আছেন তিনিই সাহায্য করবেন।
বিষয়টি আরো পরিস্কার করে বললে বলতে হয় যে, বিট্রিশ সরকার মূলতঃ
ক্রমে ক্রমে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোনঠাসা করতে নিউ স্কীম মাদরাসার প্রবর্তন করেছিল এবং ওল্ড স্কীম মাদরাসায় সরকারী সহযোগিতা করা বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই দুর্দিনে মুজাদ্দেদে যমান ফুরফুরা শরীফের পীর ছাহেব হযরত আবু বকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহঃ) দৃঢ় হস্তে ওল্ড স্কীম মাদরাসাকে কায়েম রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি আরো বলতেন, দীন ইসলাম শরা-শরীয়ত ধর্ম কর্ম যা কিছু আছে তা এই ওল্ড স্কীম মাদরাসার কল্যাণেই আছে। শিয়া, ওহাবী, কাদিয়ানী ও বেদয়াতী
ফেরকা গুলোর আক্রমণ হতে আহলে সুন্নত অল-জামাতকে রক্ষা করা কেবল এই নেছাবের আলেমগণের কল্যাণে সম্ভব হচ্ছে।
ফুরফুরার হযরত পীর ছাহেব কেবলা আরো বলতেন, জেনারেল শিক্ষা অপেক্ষা নিউ স্কীম মাদরাসায় পড়ে দীন ইসলাম সম্পর্কে বেশী জানা যায় কিন্তু এই মাদরাসায় পড়ে সুদক্ষ আলেম, ইসলাম প্রচারক, মুফতী, আল্লাহওয়ালা হওয়ার তেমন সুযোগ নেই। কারণ নিউ স্কীম মাদরাসার সিলেবাসে বাংলা, অংক, ইংরেজী, ভূগোল, ইতিহাস, আরবী সাহিত্য, উর্দু, ড্রইং ও হস্তশিল্প এগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৯৪৬-৪৭ খ্রীষ্টাব্দে নিউ স্কীম হাই মাদরাসার পরীক্ষার সিলেবাস নিম্নরূপভাবে নির্ধারণ করা হয়ঃ
১• বাংলা/ উর্দূ – ১০০ নম্বর
২• ইংরেজী – ২০০ নম্বর
৩• অংক – ১০০ নম্বর
৪• ইতিহাস ও ভূগোল – ১০০ নম্বর
৫• আরবী ২য় পত্র – ২০০ নম্বর
৬• ফিকাহ ফারায়েজ ও আকাইদ – ১০০ নম্বর
বাংলা, ইংরেজী, অংক, ইতিহাস, ভূগোল বই এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাই স্কুলের সাথে অভিন্ন ভাবে পড়ানো হত এবং পরীক্ষা নেয়া হতো। অবস্থা দৃষ্টে এই স্কীমের মাদরাসা গুলো হাই স্কুলের সম-পর্যায় চলে আসে এবং কাল ক্রমে নিউ স্কীম সিনিয়র মাদরাসা গুলো হাই স্কুলে রূপান্তরিত হয়। ফলে দীনি বিষয় সমূহের অধ্যয়নের তেমন সুযোগ না থাকায় ঐ সকল মাদরাসায় পড়ে খাঁটি আলেম তৈরী হওয়ার সুযোগ ছিলনা।
পক্ষান্তরে ওল্ড স্কীম মাদরাসার সিলেবাসে দীনি শিক্ষার প্রাধান্য থাকায় যোগ্য আলেম, নায়েবে নবী পয়দা হওয়ার সুযোগ থাকায় ফুরফুরা শরীফের পীর ছাহেব কেবলা ও ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব কেবলা হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ) ওল্ড স্কীম মাদরাসার প্রবক্তা ও সমর্থক ছিলেন। পরবর্তীতে ওল্ড স্কীম মাদরাসা নিউ স্কীম মাদরাসার অনুরূপ অবস্থায় ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ায় বিভিন্ন
কারণে হযরত মাওলানা শাহ সূফী আবু জা’ফর মুহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) ১৯৬০ইং সনে ‘আদর্শ মাদরাসা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান কায়েম করেন। কিছুদিন পর উক্ত মাদরাসা বিশেষ কারণে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য চরমভাবে ব্যহত হতে থাকায়, আমল আকিদায়, সিরাতে সুরাতে, লেবাসে পোশাকে ধ্বস নামার কারণে ১৯৮৫ইং সনে ছারছীনা দারুসসুন্নাত দারুল উলুম (নেসাবে কাদিম) নামে যে মাদরাসাটি তিনি কায়েম করেছিলেন তা বর্তমান গদ্দীনশীন পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেবের আমলে ‘ছারছীনা দারুসসসুন্নাত জামেয়ায়ে নেছারিয়া দীনিয়া’ নামে রূপ লাভ
করে।
উল্লেখ্য যে, মাদরাসার এ নামকরণ মরহুম পীর ছাহেব কেবলার ইশারায় করা হয়েছে। পথ চলতে চলতে
এ মাদরাসাটি ২০০৬ইং সনে দাওরায় হাদীসে উন্নীত হয়ে প্রথম ব্যাচ ২০০৮ইং সনে ফারেগ হয়। ছারছীনা দারুসসুন্নাত আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার পর দীনিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, শাহ্ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ) চেয়েছিলেন মাদরাসায় শিক্ষাদান করে ছাত্রদেরকে আমলে-আখলাকে, সিরাতে-সুরাতে, সর্বদিক দিয়ে রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মোজাচ্ছাম নমুনায় একদল নায়েবে নবী, সত্যিকার হাদী তৈরী করা, যে জন্য তাকে যখন নিউ স্কীম মাদরাসা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ওল্ড স্কীম মাদরাসাগুলো নিউ স্কীম মাদরাসা তথা হাই মাদরাসায়ই শুধু রূপান্তরিত হয়নি বরং স্কুল কলেজের সম-পর্যায় প্রায় এসে গেছে।
এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করার পর দূর দৃষ্টি সম্পন্ন মুজাদ্দিদে জামান হযরত মাওলানা শাহ সূফী আবু জা’ফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহঃ) ১৯৮৫ সনে কাদিমী নেছাবে দীনিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমান অবস্থা তৎকালীন সময়ের চেয়ে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অধিকাংশ মাদরাসার ছাত্রদেরকে দেখলে মনে করা যাবে না যে সে মাদরাসার ছাত্র। স্কুল কলেজের ছাত্রদের অনুরূপ লেবাস সুরাত, চাল- চলন, আদব-কায়দা, টুপি, দাড়ি, লম্বা জামাবিহীন আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিজাতীয় আদর্শে অনুপ্রাণিত। তাই বাধ্য হয়েই দীন ইসলাম ও মুসলমানদের রক্ষা কল্পে নিজস্ব তাহজীব-তামদ্দুন, কৃষ্টি-কালচার, ইসলামী সমাজ
ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বর্তমান পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ ছাহেব দীনিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় জোর দিয়েছেন।
দীনিয়া মাদরাসা বেসরকারী হওয়ার কারণে অনেকের মনে প্রশ্ন-
ভবিষ্যতে এরা কিভাবে জীবিকা অর্জন করবে?
তাদের জানা উচিত বৃটিশ প্রিয়ডে ওল্ড স্কীম মাদরাসা সমূহ প্রাথমিক যুগে ছিল সম্পূর্ণ সরকারী সাহায্য মুক্ত। পরবর্তীতে সরকারী সাহায্য দেয়া হলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। সেই সময় কুত্বুল
আলম শাহ সূফী হযরত মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ) কে মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্রদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে যে উত্তর দিয়েছিলেন তাহলো এই- কেহ কেহ বলতেন
“হুজুর! মাদরাসা শিক্ষার্থীরা কি করে খাবে? এদের চাকুরী নকরী জোটেনা”
তিনি বলতেন
“রেজেকের মালিক একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নন। দীনি এলেম শিক্ষা করা ফরজ। ইহা ব্যতীত আল্লাহর নিকট নাজাত নেই। আল্লাহ যে পরিমাণ রেজেক রেখেছেন তা আসবেই ইহা বিশ্বাস কর। রেজেক যেমন জোটে তেমন খেয়েই দীনের কাজ করে যেতে হবে।”
বর্তমান হুজুর কেবলা কেবলমাত্র ছারছীনায়ই যে দীনিয়া মাদরাসা পরিচালনা করছেন তা নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দীনিয়া মাদরাসা, দীনিয়া কমপ্লেক্স ও খানকা স্থাপন করে তাও ব্যক্তিগত তদারকিতে পরিচালনা করছেন। এমনকি এ সব মাদরাসা পরিচালনার জন্য ২০০৫ইং সনে ছারছীনাতে দীনিয়া মাদরাসা বোর্ডও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
হযরত পীর ছাহেব কেবলা দীনিয়া মাদরাসার ছাত্রদের আধুনিক প্রযুক্তি শেখানোর জন্য ২০০৯ইং সনে ২০টি কম্পিউটার সম্ব


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন