• শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

৫ দফা দাবি না মানায় রাবি উপাচার্য অবরুদ্ধ

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ৬৪
বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবি না মানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন কোটা আন্দোলনকারীরা। বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদানের পর এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে, দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আকারে পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করে কোটাবিরোধীরা। তারই প্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা। পরে আড়াইটার পর শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের দাবির বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানায় উপাচার্য। তবে দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো

১. কাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং তা লিখিতভাবে সিন্ডিকেটে পাশ করে প্রভোস্টদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। ক্যাম্পাসে যেন কোনো সন্ত্রাসী ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হলসহ যেসব হল থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ওই হলের প্রভোস্টদের পদত্যাগ করতে হবে।

২. হল খালি করার নির্দেশসহ ক্যাম্পাস ছুটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মেস মালিকদের চিঠি দিয়ে মেসগুলো খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. প্রশাসনিক ভাবে মিডিয়ার উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্পাসকে নিরস্ত্র করতে হবে।

৪. চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নামে যাতে কোনো ধরনের মামলা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে প্রভোস্টকে ১ দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের হলের সিট বরাদ্দ দিতে হবে। দখলকৃত সিটগুলোতে সাধারণ ছাত্রদের জন্য গণরুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

বৈঠক শেষে ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, সরকারের নির্বাহী বিভাগের কোনো সিদ্ধান্ত অমান্য করার সুযোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। এরপর শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন৷ একপর্যায়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। পরে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করলে তাদেরকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়৷

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় অর্নিদিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা এক জরুরি বৈঠকের ডাক দেন। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের মাঠে একত্রিত হয়ে প্রশাসন ভবন এসে ঘেরাও করে।

এর আগে চলমান কোটা আন্দোলন ইস্যুতে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এ জানাজায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেশ সহিংস রূপ নেয়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং ঢাকায় দুজন নিহত হন। এ ছাড়া কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন