ঝিনাইদহের মহেশপুর শহরের ব্যস্ততম ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে মহেশপুর-যশোর হাইওয়ে সড়কটি প্রধান। শহরের হুদোর মোড়-বেলেমাঠ বাজারের মাঝামাঝি স্থানের কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘদিন সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে থাকলেও দৃষ্টি নেই প্রশাসনের। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। একটু ভুলে ঝরতে পারে প্রাণ। ফলে বলা যায়, একরকম মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে সড়কটি।
সরেজমিন দেখা যায়, কালভার্টটির দুই পাশে ধসে গিয়ে বড় বড় দুটি গর্ত হয়েছে। মাঝখানেও ভেঙে যাওয়ায় প্লেনশিট দিয়ে কোনোরকম যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কালভার্টটির মাঝখান দিয়েই বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল করছে।
এলাকাবাসী জানায়, সাত মাস ধরে কালভার্টটি ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে অপরিচিত লোকজন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জেলা ও উপজেলা সদরে চলাচল করাসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যও সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও সব কাজেই এ উপজেলার মানুষকে যশোরের ওপর নির্ভর করতে হয়। সামান্য অসুস্থ হলে এলাকার মানুষকে পাঠানো হয় যশোর হাসপাতালে। এ সড়কটিই যশোরের সঙ্গে যোগাযোগের সহজতর একমাত্র মাধ্যম। প্রশাসনের এমন গাফিলতিতে কালভার্টটি সংস্কার না হওয়ায় মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এক পথচারী হারুন-আর রশিদ প্রতিদিন খবর কে বলেন, কিছুদিন আগে ভাঙা ওই কালভার্টে মোটরসাইকেল ও অটোভ্যান পড়ে গিয়ে দুজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। উপায় না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমাদের চলাচল করতে হয়। দ্রুত এর সমাধান না করলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আরেক পথচারী ফারুক হোসেন প্রতিদিন খবর কে বলেন, গত সাত মাসের অধিক এ কালভার্টটি দুপাশ ধসে গিয়ে দুটি বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। মাঝখানেও ভেঙে যাওয়ায় প্লেনশিট দিয়ে চলাচলের কোনো রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। আমিসহ হাজার হাজার মানুষকে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক সময় মনেই থাকে না কালভার্টটি ধসে গেছে। কালভার্টটি যেন এখন একটি মরণফাঁদ। চলাচলে খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হয়।
কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার জহিরুল ইসলাম ও মামুন, অটোভ্যান চালক মনিরুল, ট্রলিচালক সোহেল বলেন, কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চলাচল অনেকটা জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। বর্তমানে এটি নাজুক অবস্থায় থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেও হাজার হাজার গাড়িচালকদের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হচ্ছে। তা ছাড়া কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা কালভার্টের ওপর দিয়ে যানবাহনে যাতায়াত করছে। অনেক দিন ধরে ভাঙা থাকায় কালভার্টের ধসে যাওয়া অংশটি ধীরে ধীরে বড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন ঝুঁকি আরও বাড়ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ শাহারিয়ার আকাশ বলেন, সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের যে কারণে তাদের কিছুই করার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা প্রতিদিন খবর কে বলেন, বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুতই কালভার্টটি সংস্কার করা হবে।