বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহত, গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন দেশের ব্যান্ড শিল্পীরা। শনিবার ৩ আগস্ট বিকেল ৩টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ‘গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এরপর সেখান থেকে শিল্পীরা জাতীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হন। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের এই পদক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে ব্যান্ড শিল্পীদের অবস্থান আগেই নিশ্চিত করেছিল দেশের বেশকিছু ব্যান্ড। তাদের নিয়েই আজ প্রথমে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে উপস্থিত হয়। সেখানে মাইলস ব্যান্ডের প্রধান ও বামবা সভাপতি হামিন আহমেদ বলেন, ‘আর যেন একটা গুলিও না চলে, একটা জীবনও যেন না যায়। যাদের ধরপাকড় করা হয়েছে, তাদের যেন অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে জীবনগুলো গেছে, তা নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং বিচার হবে। রবীন্দ্র সরোবরে জড়ো হয়ে শহীদ মিনারে যাবেন সংগীতশিল্পীরা। এই তদন্ত হবে নির্দলীয় কোনো কমিটি দ্বারা, যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়। আমাদের কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা আমরা ফেরত চাই।’
এ সময় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আশা প্রকাশ করেন হামিন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, বাংলাদেশের মানুষ কী চায়, সে অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেবে।’
এ সময় ব্যান্ড ক্রিপ্টিক ফেইটের ভোকালিস্ট ও দল নেতা সাকিব চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের বন্দুক দিয়ে আমাদের ছাত্র, আমাদের জনতা মারা হচ্ছে। এমন হয়েছিল ১৯৫২, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ সালে। আর এখন আমাদের দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনী ছাত্রদের গুলি করছে। বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই ছবি গিয়েছে আমরা দেখতে পারছি। হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে। এখানে সিভিল ওয়ার হচ্ছে, আমরা কি শত্রু?’
এ সময় ছাত্রদের দেশের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্ররা কি দেশের শত্রু, না তারা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই আমরা ছাত্রদের সব দাবির সঙ্গে আছি। একজন প্রশ্ন করেছিল এতদিন লাগল কেন? কারণ, আমরা ভয় পাই। এই সরকার আমরা ভয় পাই। ছাত্ররা আমাদের ভয় ভেঙেছে। আমরা কেউ নিরাপদ নই এখানে।’
এ সময় শিরোনামহীন ব্যান্ডের দলপ্রধান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘ছাত্ররাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মেলাতেই আজ আমরা রাজপথে।’
ব্যান্ড শিল্পীরা শহীদ মিনারে পৌঁছালে সেখানে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এরপর গলা মিলিয়ে অনেক ব্যান্ড শিল্পীকেই গান গাইতে শোনা যায়। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণদেরও কণ্ঠ মেলাতে দেখা যায়।
কর্মসূচিতে যোগ দেন ব্যান্ড জগতের শীর্ষ তারকারা। এর মধ্যে মাইলস, মাকসুদুল হক, আর্টসেল, শিরোনামহীন, চিরকুট, কুঁড়েঘর, মেকানিক্স, ক্রিপটিক ফেইট, আর্টসেল, ওয়ারফেজ, এভয়েড্রাফা, মেঘদল ও সহজিয়া ব্যান্ড। পাশাপাশি সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, গায়ক পার্থ বড়ুয়া, প্রবর রিপন, জয় শাহরিয়ার, এ কে রাহুল, খৈয়াম শানু সন্ধি ছাড়াও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেন আরও বেশ কয়েকজন সংগীতশিল্পী।