মোঃ জমির হোসেন স্টাফ রিপোর্টার–দিন দিন নিজেদের আস্থার জায়গা থেকে সরে যাচ্ছেন রাজনীতিবীদরা। কোন কিছুতেই যেন আস্থা অর্জন করতে পারছেন না। একবার ক্ষমতায় আসীন হলে জনগণের কাছ থেকে নিজেদের দুরত্ব বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। ফলে,দ্বারপ্রান্তে পৌছে না সরকারী সুযোগ-সুবিধা গুলো। এতে ফুঁশে-ফেঁপে ওঠেন আম-জনতা। শুরু হয় যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজতে,পরিণত হয় দেশ মহা-প্লাবণে। যেটি সম্প্রতি আমাদের দেশে ঘটে গেল। জগদ্দল পাথরের মত বসে থাকা শেখ হাসিনা সরকারের অধঃপতনের মধ্য দিয়ে তা প্রমানিত হলো। ফুঁসে ওঠা ছাত্র-জনতার মহা-প্লাবনে গত ৫আগষ্ট/২০২৪ ইং তারিখ ধ্বসে গেছে আ.লীগের মত শক্তিশালী সংগঠন। কোটা সংস্কার বাস্তবায়নে আন্দোলন শুরু করে ছাত্ররা। সেই আন্দোলণের ফল স্বরুপ গঠিত হয় “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার”। দেশে ছাত্রদের নেতৃত্বে সবকিছুতে আজ সংস্কার চলছে,সংস্কার পদ্ধতিতে তারা সবক্ষেত্রে পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছেন।
সারা দেশের ন্যায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে যশোর জেলার বেনাপোল পৌর এলাকায়। না! এটি প্রশাসনিক সংস্কার নয়, শহর জুড়ে চলছে শহীদদের প্রতি স্মরণ সভা, দেওয়াল লেখনি,ট্রাফিকিং এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। আর এ কাজটি হাতে নিয়েছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। গত ৮ জুলাই/২০২৪ ইং তারিখ হতে তারা নিজ নিজ শ্রমে বেনাপোল পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে তারা এই কর্মসূচি গ্রহণ করে। শুধু পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় নয়। মাসাধিক ব্যাপি যে কাজগুলো তারা করেছে,তার মধ্যে রয়েছে-শেখ হাসিনা সরকার পতনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্কুল- কলেজে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা জানানো এবং সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বলণ, বেনাপোল পৌর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক চত্বরে ৩টি করে গাছের চারা রোপণ,বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন সড়কে অবস্থিত ডিজিটাল পোষ্ট অফিস বাউন্ডারী দেওয়ালে শহীদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে গ্রাফিতি অংকণ,
যানজট নিরসনে বেনাপোল স্থলবন্দরের মহা-সড়কগুলোয় ট্রাফিকিং ব্যবস্থায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সহ নানাবিধ কর্মসূচি তারা গ্রহণ করে। যা কিনা অবাক করার মত কাজ।
এসব কাজে নেতৃত্বদানকারী মো.মহসিন হোসেন হৃদয় জানান, “দেশে এক বড় ধরণের বিপ্লবের মাধ্যমে পাওয়া আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জন,অনেক শহীদ শিক্ষার্থীর রক্তের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। অস্বাভাবিক এই পাওয়াকে চির স্মরণীয় করে রাখতে আমাদের এই সামাজিক পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করা। এ ছাড়াও এ শহর দিয়ে দেশি-বিদেশীদের পদচারনা বেনাপোল কে গুরুত্ববহ করে তোলে,সে ক্ষেত্রে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতেই আমাদের এই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযান পরিচালনা করা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে হৃদয় বলেন,আমরা যে সকল শিক্ষার্থী এ কাজে নিয়োজিত আছি,তারা কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত না,সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই নিজ নিজ শ্রমের বিনিময়ে আমরা এই কর্মসূচি’র কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমার শহরবাসীর কাছে অনুরোধ করবো যার যার অবস্থান থেকে নিজ জায়গা পরিস্কার রাখবেন এবং নিয়মিত ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে ফেলার চেষ্টা করবেন”।
যে সকল শিক্ষার্থীরা এ কাজে অংশ নেন তারা হলেন-মোঃ মাহাদী হাসান জিসান,তানজিম আহম্মেদ ফাহিম,আহম্মেদ জুবায়ের তূর্য,ইয়াসির সিয়াম,ইমন আলী,আবরার আলভী,শরীফ উদ্দিন আলিফ,নাঈম ইসলাম,মাহমুদ ইসলাম সাজিম,এজাজ আহম্মেদ বিজয়,তাহমিদ তামিম,তাসনিম আলম রাফি,নাফিদুল হাসান নাফি,সাজিন করিম,সানজিম হাসান অনিক,নাহিদুল ইসলাম,রহিমা খাতুন,সাইমা আক্তার সীমা,জিএম নাইম,জুবায়ের ইসলাম,এস এইচ সোহাগ,সাদিক হাসান মাহিম সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।