ভারতে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। দেশটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং সব বয়সীদের আত্মহত্যার প্রবণতা দুটোকেই ছাড়িয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার এই ভয়ংকর প্রবণতা।
জাতীয় অপরাধ অধিদপ্তর ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, 'শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা: মহামারি রূপে ছড়িয়েছে ভারতে' প্রতিবেদনটি বুধবার (২৮ আগস্ট) বার্ষিক আইসি-থ্রি সম্মেলন এবং এক্সপো ২০২৪-তে প্রকাশ করা হয়। এই সম্মেলনটিতে শিক্ষার্থীদের ওপর গবেষণা, ভবিষ্যৎ গঠন এসব বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামগ্রিক আত্মহত্যার বার্ষিক হার বছরে ২ শতাংশ বেড়েছে, তবে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার ঘটনা চার শতাংশ বেড়েছে, যদি এসব ঘটনা অনেক সময় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না। গত দুই দশকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার বছরে ৪ শতাংশ বেড়েছে, যা সব বয়সী মানুষের বা জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ। দেশটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার এক শতাংশের নিচে।
২০২২ সালে শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ৫৩ শতাংশ ছাত্র ছিলেন। ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ছাত্রদের আত্মহত্যা ৬ শতাংশ কমলেও নারীদের আত্মহত্যা ৭ শতাংশ বেড়েছে৷ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং সামগ্রিক আত্মহত্যার প্রবণতা উভয়কেই ছাড়িয়ে গেছে।
গত এক দশকে, যেখানে শূন্য থেকে ২৪ বছর বয়সীদের জনসংখ্যা ৫৮ কোটি ২০ লাখ থেকে ৫৬ কোটি ১০ লাখে নেমেছে সেখানে শিক্ষার্থীর মাঝে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬ হাজার ৬৫৪ থেকে বেড়ে ১৩ হাজার ৪৪ হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয় মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং মধ্যপ্রদেশে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা দেশের মোটের এক-তৃতীয়াংশ।
দক্ষিণের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো সম্মিলিতভাবে ২৯ শতাংশ। যদিও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আইন-২০১৭ মানসিক রোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে না।
আইসি-থ্রি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা গণেশ কোহলি বলেন, এই প্রতিবেদনটি আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জরুরি প্রয়োজনের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবশ্যই আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়ানোতে মনোযোগী হতে হবে যাতে এটি তাদের সামগ্রিক মঙ্গলকে সমর্থন করে। তাদের একে অপরের মধ্যে প্রতিযোগিতা থামাতে হবে।' শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার গভীর বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন তিনি৷