চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান।
অভিযুক্তরা হলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মচারী ও ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের অনুসারী শরিফ উদ্দিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইনের অনুসারী সাইদুল ইসলাম সাইদ, সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী আরিফুল ইসলাম আরিফ, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী এইচটি ইমাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী জজ মিয়া ওরফে মাজহারুল ইসলাম, আইন বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী ইয়াসিন আরাফাতসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন।
এ ছাড়া কনকর্ড গ্রুপের নেতা অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ারসহ বেশ কয়েকজনের নাম পরবর্তীতে মামলায় যুক্ত হবে বলেও জানিয়েছেন মামলার বাদী সাব্বির হোসেন রিয়াদ।
এজহারে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমিসহ (বাদী) অন্যান্য সহযোদ্ধারা ক্যাম্পাসে সমন্বয়কদের সঙ্গে মিছিল মিটিং, সমাবেশ করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা ১০ মিনিটের সময় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় আমরা মিছিলে জড়ো হয়ে ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছিলাম। ওই সময় বিবাদীরা অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জন রাত সাড়ে ১১টার দিকে দলবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র হাতে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় আমরা আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই।
এজহারে আরও বলা হয় হয়, বিবাদী ও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ ছাত্রলীগের চিহ্নিত নেতাকর্মী আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বানচাল করার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, গত ১৪ জুলাই আনুমানিক রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ৪-৫ টি ককটেল বিষ্ফোরণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আক্রমণ করে। স্বৈরচারের সহযোগী এই ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকিধমকি ও ভয়ভীতি দেখাতো। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্তের জন্য হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এসআই হাসান বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।