নিজস্ব প্রতিবেদক : বাগেরহাটের শরণখোলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুলতান হাওলাদারের বাড়িতে নারকীয় তান্ডব চালিয়ে চারজনকে পিটিয়ে আহত ও লুটপাট চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ফজরের নামাজের পরে উপজেলার মালিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। হামলায় সুলতান হাওলাদার, তার স্ত্রী মিনারা বেগম, পুত্র মনিরুজ্জামান ও কন্যা সুরভী আক্তার আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে সুরভী আক্তারের অবস্থা আশংকাজনক অবস্থায় শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও শরণখোলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আহত সুলতান হাওলাদার জানান, পশ্চিম খাদা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন মানিক ও তার ভাই জাকির হাওলাদারের সাথে আমাদের কোন শক্রুতা নাই।
আজ (বৃহস্পতিবার) ফজরের নামাজের পরে মানিক চৌকিদারের ভাই জাকির এর নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক সন্ত্রাসী লাঠি সোটা দেশীয় অস্ত্র নিয়া তান্ডব চালায় এবং আমার কন্যা সুরভী ও পুত্র মনিরকে এলোপাথাড়ী পিটিয়ে আহত করেছে। ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানায়, বিএনপি ক্ষমতায় এখনো আসেনি তাতেই যদি এই হয় তাহলে ক্ষমতায় আসলে কি করবে তারা। শোনা যাচ্ছে মানিক চৌকিদার আগামী নির্বাচনে রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হবে। ভাগ্যক্রমে যদি সে জিতে যায় তাহলে তার ভাইয়েরা পুরো ইউনিয়ন দখল করে নেবে ও অশান্তির রাজ্যে পরিনত করবে নিশ্চিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মালিয়া রাজাপুর গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা, নিঃসন্তানী গোলভানু বেগম ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে গিয়া ভিক্ষা সহ অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজের টাকা জমিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই হিসাবে উপজেলাধীন ৭নং দক্ষিণ রাজাপুর মৌজায় সাড়ে নয় কাঠা জমি খরিদ করে বসবাস করছেন। এক সময় তার আপণ বোন হাওয়া বেগম ও ভগ্নিপতি নান্না হাওলাদারের মাথা গোজার ঠাই না থাকায় তাদেরকে বসবাসের সুযোগ দিয়া পুনরায় গোলভানু বেগম ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে পূর্বের পেশায় ফিরে যান।
এই সুযোগে নান্না হাওলাদার অজ্ঞাত পরিচয়ের কাউকে সাব-রেজিস্ট্রার এর সামনে হাজির করাইয়া গোলভানুর নামীয় জমির মধ্য হইতে সাড়ে ষোলো শতক জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করিয়া নেয়। পরে নান্না হাওলাদার দাতা হয়ে উক্ত জমি উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের সগির হোসেন ব্যাপারীর নিকট বিক্রয় করেন। পরে গোলভানু বেগম বিষয়টি জানার পরে তার বোন ও ভগ্নিপতিকে ঘর হইতে বের করিয়া দিলে তার বোন হাওয়া বেগম বাদী হয়ে গোলভানু সহ তার আত্মীয় স্বজনকে বিবাদী করে বাগেরহাট বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুমি অপরাধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
গোলভানু বেগম আদালতে হাজির হয়ে নান্না হাওলাদার এর বরাবরে রেজিস্ট্রিকৃত দলিল সম্পাদনের কথা অস্বীকার করেন। বিজ্ঞ আদালত তাৎক্ষনিক গোলভানু বেগমের দুই হাতের আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ করেন এবং পিবিআই বাগেরহাটকে তদন্তের দায়িত্ব অর্পন করেন। পিবিআই বাগেরহাট স্থানীয় স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ সহ সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে হাতের আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে দীর্ঘ তদন্ত শেষে নান্না হাওলাদার কর্তৃক জাল জালিয়াতির প্রমানযোগ্য দলিলাদি সহ বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালতে মামলা চলাকালীন সময়ে সগীর ব্যাপারীর পিতা লাল মিয়া ব্যাপারী ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম উক্ত জমি দখলে নিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে এ ন্যাকারজনক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসীর ধারনা…