মোঃ জমির হোসেন স্টাফ রিপোর্টার-
পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে “রূপসী বাংলা’ এক্সপ্রেস” ট্রেনের শুভ উদ্বোধণ ঘোষণা করা হলো। মাত্র পৌনে ৪ ঘন্টা সময় নিয়ে ঢাকায় পৌছবে ট্রেনটি। বিকাল ৩.২৫ মিনিটে বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর,নড়াইল,কাশিয়ানী এবং ভাঙ্গা স্টেশনে বিরতি নিয়ে ঢাকায় পৌছবে সন্ধ্যা ৭টার দিকে। সপ্তাহের প্রতি সোমবার ট্রেনটি চলাচল করবে না।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো.সাইদুজ্জামান জানিয়েছেন-“রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস” এ যা রয়েছে-৮২৭(বেনাপোল)/৮২৮(ঢাকা) ট্রেনটিতে ১১টি(প্যাসেঞ্জার বহণ) এবং ১টি(ল্যাগেজ বহন) সর্বমোট ১২ টি বগি রয়েছে। এসি কেবিন কোচ(১টি) আসন সংখ্যা-৪৮ টি। এসি চেয়ার কোচ(৪টি) আসন সংখ্যা(প্রতি বগি ৮০★৪-৩২০টি)। শোভন চেয়ার কোচ(৬টি) আসন সংখ্যা(প্রতি বগি ৬৬★৬-৩৯৬টি), ১১টি বগির সর্বমোট আসন সংখ্যা-৭৬৮টি। ট্রেন সংকুলানের কারনে কোটা ভিত্তিক আসন বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। বেনাপোলের জন্য বরাদ্ধ–শোভন চেয়ার-১৪০টি,এসি চেয়ার-১২০টি,এসি কেবিন-২০টি। বেনাপোল বাসীর জন্য মোট-২৮০ টি আসন বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। বেনাপোল টু ঢাকা শোভন চেয়ার প্রতি আসনের ভাড়া-৪৫৫/-টাকা,এসি চেয়ার-৮৬৯/-টাকা এবং এসি কেবিন-১০৪১/- টাকা।
মঙ্গলবার(২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ টায় বেনাপোণ রেলওয়ে প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ ট্রেনটি’র উদ্বোধন ঘোষণা করেন-যশোর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজজিস্ট্রেট-মো.আজাহারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-শার্শা উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান এবং পুলিশ,বিজিবি সহ জেলা/উপজেলার উচ্চ পদস্থ সরকারী অফিসারবৃন্দ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে,বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি গত রোববার “প্রেসক্লাব যশোর” এ এক সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছে-
বেনাপোল-যশোর-ঢাকা পদ্মাসেতু লিংক প্রজেক্টের ট্রেনকে ‘উচ্ছ্বাস নয়, বিক্ষোভে’ বরণের কর্মসূচি পালন করে। তাদের দাবি পদ্মা সেতুর এই রুটে মাত্র একটি ট্রেন দিয়ে যশোর ও খুলনাবাসীকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পূর্বঘোষিত তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
দ্রুততম সময়ে যশোর-ঢাকা-পদ্মাসেতু লিংক প্রোজেক্টে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে ২টি ট্রেন চালুসহ দর্শনা-যশোর-নড়াইল- ঢাকা রুটে ২টি ট্রেন চালু, নিজ শহর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করার জন্য ট্রেনের সময় সূচী তৈরি করা, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগী যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাস ভাড়া থেকে কম রাখা, ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তির সহজ পদ্ধতি চালু করা, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে এই দাবিসমূহ পূরণ না হলে যশোরবাসী বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।
অপরদিকে,আগে থেকেই রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়-
২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পদ্মাসেতু লিংক প্রকল্পে মাত্র একটি ট্রেন দিয়ে যশোর-ঢাকা পদ্মাসেতু লিংক প্রজেক্টে খুলনা ও বেনাপোল থেকে ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেনটি জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নামে খুলনা থেকে (খুলনা-ঢাকা-খুলনা) এবং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে বেনাপোল থেকে যাতায়াত করবে। গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের উপপরিচালক (টিটি) মো. খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত পত্রে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সিডিউল অনুযায়ী, ২৪ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নাম নিয়ে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকা থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে বেনাপোলের উদ্দেশে যাত্রা করবে। যশোর জংশন হয়ে দুপুর আড়াইটায় বেনাপোলে পৌঁছাবে। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। এরপর ট্রেনটি জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নাম নিয়ে ঢাকা থেকে রাত ৮টায় যাত্রা করে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, যশোর থেকে বর্তমানে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করছে। এর মধ্যে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেস যশোর থেকে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া- রাজবাড়ি-ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। আর খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী হয়ে যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। এই ট্রেনগুলো পূর্বের রুটেই বহাল থাকছে।