কোটি টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক বিভাগের ইজারাদার
আঃ হাকিম বিশেষ প্রতিনিধি
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার নগর ঘাটা ফেরি ঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা যায় বিআইডব্লিউটিএ এর ইজারাদার ঘাটে জনসাধারণ ও যানবহন থেকে টোল আদায় করছে। ফেরিতে টোল করছে আদায় করছে স ওজ এর ইজারাদার। একই ঘাট, একই পল্টুন ব্যবহারে ২ বার টোল আদায়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছে যানবাহনের চালকরা ।
বিআইডব্লিউটিএ এর নিযুক্ত ইজারাদার শেখ আলী আকবর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিআইডব্লিউটিএ এর ইজারাদার হিসাবে আমার নিযুক্ত লোক দিয়ে টোল আদায় করছি । বিআইডব্লিউটিএর নিজস্ব পল্টুন নাই একই পল্টুন ব্যবহার করে টোল আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ৩ মাস যাবত এখানে টোল আদায় করছি। বিআইডব্লিউটিএর নিজস্ব পল্টুন নাই তবে কর্তৃপক্ষ পল্টুন করে দিবে। যানবাহন থেকে টোল আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যানবাহন বিআইডব্লিউটিএর ফোরসোর ব্যবহার করছে এজন্য যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায় ৪০ হাজার টাকায় বিআইডব্লিউটিএ মার্চ মাসের জন্য উক্ত ইজারাদারকে স্পট টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দিয়েছে । ঘাটে এখন তাদের কোন পল্টুন নাই ।এ বিষয়ে স ও জ খুলনার নিযুক্ত ফেরিঘাটের ইজারাদার মেসার্স ফারদিন স্টোন বাজার এর স্বত্বাধিকারী ফিরোজ মোল্লার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি উক্ত ফেরিঘাট টি ৩ বছরের জন্য ১কোটি ৬৬ লক্ষ টাকায় ইজারা নিয়েছি আমার আর মাত্র ৬ মাস সময় আছে । ফেরিঘাট টি ইজারা নেওয়ার পর থেকে জেলা পরিষদ খুলনা বেআইনিভাবে একই পল্টুন ও একই ঘাট ব্যবহার করে ইজারাদার নিয়োগ দিয়েছিল । বর্তমানে ৩ মাস যাবত বিআইডব্লিউটিএ মাসে ৪০ হাজার টাকা ইজারা দিয়ে আমার ইজারাকৃত ঘাট ও পল্টুন ব্যবহার করে বেআইনিভাবে টোল আদায় করছে । প্রতিষ্ঠান দুটির বেআইনি কার্যক্রমের ফলে আমি এযাবৎকাল ১ কোটি টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি । কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন সাধারণত ফেরি এপার থেকে ওপারে যাওয়া লোড আনলোড করতে ৩০/৪০ মিনিট সময় লাগে। যানবাহন না থাকলে কখনো কখনো এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগে । এ সময় মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ইঞ্জিন চালিত ভ্যানগাড়ি আগে জেলা পরিষদের ইজারাদারের নিযুক্ত ট্রলার সমূহ ও বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ ইজারাদারের নিযুক্ত ট্রলার সমূহে আলাদা ভাবে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের টোল ও ট্রলার ভাড়া প্রদান করে পারাপার হয়। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন ১০/১৫ হাজার টাকার টোল হারাচ্ছি । এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য আমি স ওজ খুলনার মাধ্যমে আরো বছর দুয়েক আগে সকল দপ্তর , জেলা প্রশাসক, ও বিভাগীয় কমিশনার কে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম । কোন প্রতিকার না পেয়ে আমি নিজেও লিখিতভাবে সকল দপ্তরকে জানিয়েছি । প্রতিদিন আমার ফেরিতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রচুর যানবাহন ভিআইপি হিসাবে বিনা ভাড়ায় পারাপার করি । প্রায় ই সরকারি দপ্তরের গাড়ি আনা নেওয়ার জন্য অন্য কোন পরিবহন ছাড়াই ফেরি যাতায়াত করে । ফলে ফেরির জ্বালানি খরচ ও আমার নিযুক্ত কর্মচারীদের বেতন পকেট থেকে গুণতে হয়। আমি উক্ত ফেরিঘাট টি ইজারা নেওয়ার পর থেকে অদ্যবধি ১ কোটি টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্ত । সংশ্লিষ্ট ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি ।বিভিন্ন সময় একই জায়গায় দু তরফা টোল আদায়ের ফলে না বুঝেই জনসাধারণ স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ করলে প্রশাসনের রোশনালেও আমাকে পড়তে হয়। এরকম অহেতুক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে ১৪/ ১৫ দিন আগে দিঘলিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে মুঠোফোনে না পেয়ে আমার স্ত্রীকে মুঠোফোনে কর্কশ ভাষায় শাসিয়েছে । বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক । কারণ ফেরিঘাট টির ইজারাদার মেসার্স ফারদিন স্টোন বাজার প্রোপাইটার মোহাম্মদ ফিরোজ মোল্লা ফেরিঘাটের সাথে আমার অসুস্থ স্ত্রীর কোন সম্পৃক্ততা নেই।
বিষয়টি নিয়ে স ওজ খুলনার নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ তানিমুল হক এর সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, যেহেতু বিআইডব্লিউটিএ উক্ত ঘাটে কোন পল্টুন ও ফেরি নাই সেহেতু তারা বেআইনিভাবে টোলা আদায় করছে এ বিষয়ে আমার দপ্তর থেকে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরদেরকে জানানো হয়েছিল আমি নিজেও বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও বিআইডব্লিউটিএকে জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক খুলনা মোঃ মাসুদ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সড়ক বিভাগ খুলনার সাথে আমাদের কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমরা আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ঘাটটি ইজারা দিয়েছি খুব দ্রুত নগর ঘাটে আমাদের পল্টুন স্থাপন করা হবে ।