• শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ অপরাহ্ন

সুশীল বাবুদের দিয়ে গণতন্ত্র আসবে না: এমপি জয়

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ১০০
শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সুশীল সমাজের একটি অংশের সমালোচনা করেছেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) তানভীর শাকিল জয়। তিনি বলেছেন, ‘ওই সুশীল বাবু, কুশীল বাবু আর নরসুন্দর বাবুদের দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আসবে না। বাংলাদেশে শুধুমাত্র সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, থাকবে এবং শক্তিশালী হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।’

আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তানভীর শাকিল জয়।

জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলীর পৌত্র তানভীর শাকিল জয় বলেন, ‘আমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে আমি তৃতীয় প্রজন্মের হয়ে সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি।’

সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর একটি লক্ষ্য ছিলো- সংসদ হবে জনগণের আর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। ১১ জুন ১৯৭৩ সালের সংসদে আমার দাদা তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী শহীদ এম মনসুর আলী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে রেল বাজেটের উপর ভাষণে বলেছিলেন, আমরা ইতিপূর্বে বলেছি যমুনার উপর পুল করা সরকারের অনেক দিনের আশা। আমরা নির্বাচনের সময় বলেছি এবং বঙ্গবন্ধুও বলেছেন আমাদের ভুললে চলবে না যে, আমাদের যমুনার উপর পুল তৈরির প্রতিশ্রুতি ছিলো এবং নির্বাচনী ঘোষণাও ছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছেন ইকোনোমিক্যালি ফিজিবল হবে কিনা সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়, টেকনিক্যিালি ফিজিবল হবে কিনা সেটাই মূখ্য বিষয়। কারণ জনগণের উন্নয়নই আমাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

তানভীর শাকিল জয় বলেন, আজকে জাতীয় সংসদ গণতন্ত্র চর্চার মূল কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু আমরা দেখেছি বারবার এই বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ এবং গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। আমরা দেখেছি ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বরের পর জেনারেল জিয়া কীভাবে গণতন্ত্রকে বন্দি করেছেন এবং সামরিক শাসন জারি করেছেন। আর হ্যাঁ-না ভোটের মতো প্রহসনের ভোটে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় পার্লামেন্টে তিনি কলঙ্কিত কুখ্যাত ইনডেমনিটিকে প্রতিষ্ঠিত করে সংসদকে কলঙ্কিত করেছেন।

তানভীর শাকিল জয় আরও বলেন, ১৯৮১ সালে কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসেন এবং তখন থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকার পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বক্তব্যের এক পর্যায়ে তার সময় ফুরিয়ে আসায় স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, নাতি কোটায় আমাকে অল্প একটু সময় বাড়িয়ে দিয়েন। প্লিজ মাননীয় স্পিকার।’ এসময় সংসদে হাসির রোল পড়ে যায়। পরে তানভীর শাকিল জয় তার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে এসে আরও একবার বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আরেকটু সময় দেবেন। নাতি কোটা… প্লিজ মাননীয় স্পিকার।’ এসময় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে স্পিকার নিজেও হেসে ফেলেন এবং বলেন, ‘আচ্ছা, আর দুই মিনিট বলুন।’

সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবে আলোচনাকালে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের মহান স্বাধীনতা, স্বাধীনতা যুদ্ধকে অপমান করা হয়। আজকে স্বাধীনতা দিবসে অপমান করে বিকৃতভাবে চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়।’

তানভীর শাকিল জয় বলেন, ‘আমি সেসব সুশীল বাবু এবং তাদের পত্রিকার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, যখন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল— তখন স্বাধীনতার চেতনা কোথায় ছিল? যখন ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল তখন স্বাধীনতা কোথায় ছিল? যখন বাংলাদেশে সারের জন্য কৃষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, যখন বিদ্যুতের জন্য সাধারণ মানুষকে গুলি করা হয়েছিল তখন স্বাধীনতা কোথায় ছিল? তখনতো আপনাদের বোধোদয় হয় নাই, তখনতো আপনারা স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন নাই। এখন আপনারা স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন। কারণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ। আজকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের বাংলাদেশ। আজকে পদ্মা সেতুর বাংলাদেশ, আজকে মেট্রোরেলের বাংলাদেশ, আজকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ; তাই আপনাদের গায়ে জ্বালা ধরে। ওই সুশীল বাবু, কুশীল বাবু আর নরসুন্দর বাবুদের দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আসবে না। বাংলাদেশে শুধুমাত্র সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, থাকবে এবং শক্তিশালী হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।’

বক্তব্যের শেষ দিকে তানভীর শাকিল জয় তার পিতাকে স্বরণ করে বলেন, ১৯৮৬ সালে সংসদে মোহাম্মদ নাসিম এক ভাষণে বলেছিলেন— এটা নতুন বাংলা নয়, হাজার বছরের শোষিত বাংলা, এই বাংলা সূর্ষসেন, তীতুমীরের বাংলা, এই বাংলা মোজাম্মেল ময়জুদ্দিনের বাংলা, এই বাংলা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী, শেরে বাংলার বাংলা, এই বাংলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সোনার বাংলা। আজকে এই বাংলা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নত সমসৃদ্ধশালী সংসদীয় গণতন্ত্রের মূর্তপ্রতীক।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন