• বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:২৪ অপরাহ্ন

যতদিন বেঁচে আছি রক্তদান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো- এ.জেড মিজান

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ৯০
বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
Exif_JPEG_420
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

   মাহমুদুন্নবী
নওগাঁ প্রতিনিধি:

তুচ্ছ নয় রক্ত দান – বেঁচে যেতে পারে একটি প্রাণ” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে ১৯৯৭ সালে একক চেষ্টায় রক্তদান কর্মসূচী শুরু করেন নওগাঁর পত্নীতলার রক্তের ফেরিওয়ালা খ্যাত এ.জেড মিজান।

১৯৯৭ সালে বাচ্চা ডেলেভারীর সময় প্রচুর ব্লিডিং এর ফলে তার প্রতিবেশীর মৃত্যু হয়। প্রতিবেশির মৃত্যুটাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি তৎকালীন ছাত্রদল নেতা এ.জেড মিজান। তারপর থেকেই নিজে নিজের কাছেই প্রতিঙ্গাবদ্ধ হয় যে, রক্তের অভাবে আর কোন মানুষ কে মারা যেতে দিবোনা। সে থেকেই একেক চেষ্টায় রক্তদান কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। প্রথমত অনেকেই রক্তদান করতে ভয় পেলেও সময়ের ব্যবধানে এই ভয় কে জয় করে নিয়েছেন এ.জেড মিজান। ১৯৯৭ সালে রক্তদান কর্মসূচি শুরু করলেও বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাঝ পথে থেমে যান তিনি। ২০১২ সালে নজিপুর বনিক সমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পরে আবারো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি তে জোড় দেন এ.জেড মিজান। সে থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার রক্তের ডোনারের মাধ্যমে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ কে রক্ত দান করেছেন তিনি।

রক্তদান সেন্টারে স্বরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরজা ও রক্তদান সেন্টারের বাহিরে ও ভিতরের বিভিন্ন দেওয়া রক্তের ডোনারদের রক্ত দানকৃত ছবি সারিবদ্ধ ভাবে স্মৃতি হিসাবে দৃশ্যমান করে রেখেছেন। কথা হয় একাধিক নিয়মিত রক্তের ডোনার আব্দুল বারিক ও আব্দুল হাই সিদ্দিক এর সাথে। তারা বলেন, আমার প্রথমে রক্ত দিতে ভয় পেতাম। মিজান ভাই আমাদের উৎসাহ দিয়ে রক্তদান করিয়েছেন। পরবর্তীতে আমরা ডাক্তারের নিকট থেকে জানতে পারি নিয়মিত রক্ত দান করলে শরীর ভালো থাকে ও বিভিন্ন ধরণের রোগ-বালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তারপর থেকে আমরা এ.জেড মিজান ভাইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে নিয়মিত ভাবে রক্তদান করে আসছি।

কথা হয় রক্ত গ্রহিতা আনোয়ার হোসেন, মিলন হোসেন, আমেনা বিবি ও শামীমা আক্তারের সাথে, তারা বলেন, আমাদের রোগীকে বাঁচানোর জন্য রক্তে খুব প্রয়োজন ছিলো। বিভিন্ন দিকে ছুঁটাছুটি করার পরেও কোথাও রক্ত না পাওয়ায় একজন বললো রক্তের ফেরিওয়ালা এ.জেড মিজানের কাছে যাও। ওনার কাছ থেকে মিজান সাহেবের মোবাইল নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করলে তিনি খুব দ্রুত আমাদের রক্ত সংগ্রহ করে দেন।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ বলেন, আমরা তো মনে করি সমাজের বুকে যত প্রকার সেবা আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সর্বোত্তম সেবা হলো রক্তদান করা। কেননা রক্ত এমনি একটা প্রয়োজনীয় জিনিস যা সমাজের সর্বোনিন্ম থেকে সর্ব্বোচ্চ মানুষের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় কোটি টাকা দিয়েও রক্তে পাওয়া যায়না। সেই রক্ত আমরা আমাদের মিজানের সহযোগীতায় খুব সহজেই বিনামূল্যে পাচ্ছি যার ফলে সৃষ্টিকর্তার রহমেত রোগীও বেঁচে যাচ্ছেন।

প্রখ্যাত ওয়াজেন মাও সানোয়ার হোসেন সাঈফী বলেন, রক্ত দেওয়া খুব ভালো কাজ কিন্তু রক্ত বিক্রি করা হারাম। রক্ত এমনি একটি দেহের অংশ যেটি দিলে কমেনা বরং আরো বাড়ে যাবে। দেহে দীর্ঘ্যদিন রক্ত থাকার ফলে এই রক্তের মাঝে বিভিন্ন রকমের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস তৈরী হয়। যার ফলে নিদিষ্ট সময়ে পর রক্ত দান করা ভালো। এর ফলে একজন মুমূর্ষ রোগী রক্ত নিয়ে উপকৃত হলো।

এবিষয়ে রক্তের ফেরিওয়ালা খ্যাত এ.জেড মিজান বলেন, ”তুচ্ছ নয় রক্ত দান – বেঁচে যেতে পারে একটি প্রাণ” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে ১৯৯৭ সালে একক চেষ্টায় রক্তদান কর্মসূচী শুরু করেছি, যতদিন বেঁচে আছি এই মানব সেবাটি করে যেতে চাই। এবিষয়ে আমি সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।

 


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন