• শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ৩২৯
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব।
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন এবং পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৬ নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় ওই ছাত্রদল নেতার বন্ধুকেও মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতারা।

সোমবার (৬ মে) রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তবে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব, সহসভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ শেখ, সাদিকুল ইসলাম সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ ও মাদার বখশ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিশকাত হাসান।

এদিকে ভুক্তভোগীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খান। নাফিউল বর্তমানে ওই দলের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৯টার দিকে নাফিউল ও তার বন্ধু ইউনুস খান ক্যাম্পাসে ঘুরতে যান। ক্যাম্পাস ঘুরে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের সামনে দাঁড়ালে ছাত্রদল নেতা বুঝতে পারেন ছাত্রলীগের তিনজন নেতা তাদের অনুসরণ করছেন। পরিস্থিতি বুঝে মোটরসাইকেলে করে রোকেয়া হলের পেছনের ফ্লাইওভার সংলগ্ন গেট দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা তাদের পথরোধ করেন এবং জোরপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান।

এর কিছুক্ষণ পর সেই কক্ষে যান গালিব ও অভিযুক্ত অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতারা। কক্ষে গিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তারা। জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন বলে স্বীকার করেন নাফিউল ইসলাম। এরপরই তাকেসহ তার বন্ধু ইউনুস খানকে মারধর শুরু করেন গালিব। একপর্যায়ে পিস্তল দেখিয়ে নাফিউলকে নানারকম হুমকি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রাত ১টার দিকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে তুলে দেন ছাত্রলীগ নেতারা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা নাফিউল ইসলাম বলেন, আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিব আমাকে প্রায় তিন ঘণ্টার মতো আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। গালিবের কাছে থাকা একটি পিস্তলে বুলেট লোড-আনলোড করে আমাকে ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি নানারকম হুমকিও দিয়েছেন। এছাড়া তারা জোরপূর্বক আমার মোবাইল চেক করেন। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ইউনুস খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব বলেন, ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। তবে এর আগেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। সেই সন্দেহ থেকে তাকে নিয়ে এসে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করেছি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। তারা সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তবে মারধর বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগীরা।

 


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন