• মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন

একজন ডাক্তার দিয়ে চলছে হাসপাতাল

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ৬২
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি : প্রতিদিন খবর
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৮৪ সালে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হয়। ২০১১ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এলাকার জনগণ পাচ্ছিলেন ভালো সেবা। তবে বর্তমানে এই হাসপাতালটিতে দেখা দিয়েছে চিকিৎসক সংকট। মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে সেবাদান।

উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের জন্য একটি হাসপাতালে শুধু বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এতজন রোগীর বিপরীতে চিকিৎসক মাত্র একজন। দশজন সহাকারী সার্জন থাকার কথা থাকলেও আছেন দুজন। একজন রয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে। আর একজন দিয়েই পুরো আড়াইলাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

ডাক্তার সংকটের কারণে হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. সুমাইয়া আক্তার দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালের রোগীদের।

হাসপাতালে জুনিয়র কলসালটেন্ট ১১ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র পাঁচজন। নেই আবাসিক মেডিকেল অফিসারও, সহকারী সার্জন ১০ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন দুজন, একজন অন্যত্র প্রেষণে। নেই নার্সিং সুপারভাইজারও, সিনিয়র স্টাফ নার্স ২৪ জন থাকার কথা থাকলেও নেই ৫ জন, মিডওয়াইফ ৪ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন একজন, বাস্তবে হাসপাতালে নেই তিনি।

তৃতীয় শ্রেণির ৬২ জন থাকার কথা থাকলেও নেই ২৪ জন। ১৫২ জন স্টাফের মধ্যে ১০৩ জন দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে বাহুবল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা ভাদেশ্বর গ্রামের আছিয়া বেগম বলেন, ভর্তি হয়েছি দুদিন। আজ সকালে একজন ডাক্তার আসছিলেন, আর কোনো ডাক্তার আসেননি।

মুড়াউড়া গ্রামের সাবানা আক্তার জানান, একজন ডাক্তার থাকায় তাদের ডাক্তার দেখানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যদি ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো হয় তবে তারা সহজে সেবা পেতে পারেন।

হাফিজপুর থেকে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ডায়রিয়া নিয়ে দু দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। নার্স স্যালাইন একটা দিয়েছে আর কেউ আসেননি।

বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে ভেড়াখাল গ্রামের জলিল মিয়া বলেন, ডাক্তার একজন থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে পরে দোতলায় গিয়ে একজন নারী ডাক্তারের দেখা পাই।

এ বিষয়ে বাহুবল হাসপাতালে আর এম ও (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার সুমাইয়া আক্তার বলেন, লোকবলের অভাবে এই হাসপাতালে রোগীদের ভালো সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। চাহিদামতো ডাক্তার, নার্স ও ক্লিনার কোনোটাই নাই এই হাসপাতালে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. বাবুল কুমার দাস জানান, ডাক্তার সংকটসহ অন্যান্য স্টাফ সংকটের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। হয়তো খুব দ্রুত এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবল সরবরাহ করা হবে।

হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক বলেন, খুবই কঠিন অবস্থা। আজকে ডিজিকে জানিয়েছি। আমি এই সংকটটি যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন