• শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন

ডিবি হেফাজতে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ভিডিও বার্তা নাহিদের, ‘জিম্মি করে’ অতঃপর..

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ৬৫
সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪
নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদসহ ছয় জন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে হেফাজতে রেখেছে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

‘নিরাপত্তার স্বার্থ’ দেখিয়ে পুলিশ শুক্রবার হাসপাতাল থেকে নাহিদ ইসলামসহ আরো দুজন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে ‘হেফাজতে’ রাখলেও নাহিদ ইসলামের সাথে রোববার তার মাকেও দেখা করতে দেয়া হয়নি। আটককৃতদের পরিবারের সদস্যরা তাদের সাথে দেখা করতে গেলেও তাদের সাথে দেখা করতে দেয়নি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

তবে সন্ধ্যার পর পুলিশ হেফাজত থেকে একটি ভিডিও বার্তায় নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলন তুলে নেয়ার বার্তা দেন। একটি লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘’কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ঊদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাব আহত ও নিহত হয়েছে। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা স্থাপনায় সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।‘’

”আমাদের যৌক্তিক দাবি ছিল কোটা সংস্কার, যা সরকার ইতোমধ্যে পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।‘’

এ সময় তার পাশে ডিবি হেফাজতে থাকা অন্য পাঁচ সমন্বয়ককে বসে থাকতে দেখা যায়। তার ৯টার দিকে গণমাধ্যমে এই ভিডিও পাঠানো হয়।

কিন্তু তাদের এই বক্তব্য ‘সাজানো’ এবং ‘জিম্মি করে’এই বক্তব্য পাঠ করানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন আত্মগোপনে থাকা অন্য দুই জন সমন্বয়ক।

নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘’সমন্বয়কদের জিম্মি করে নির্যাতনের মুখে যে স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হইছে, সেটা কখনোই জাতির নিকট গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আটককৃত সমন্বয়করা ভয়ভীতির মুখে গোয়েন্দা সংস্থার লিখে দেওয়া যে বক্তব্য কেবল রিডিং পড়ে গেছে, আমরা সেই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং একইসাথে জোরপূর্বক বক্তব্য আদায় করার মতো সরকারের এমন জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।‘’

অন্যদিকে আরেকজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ একটি ক্ষুদে বার্তায় বলেছেন, ‘’ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের জিম্মি করে ব্ল্যাকমেইল করে এই লিখিত বক্তব্য পাঠ করানো হয়েছে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিবৃতি আদায় ছাত্রসমাজ মেনে নিবে না।‘’

গত তিনদিনে নাহিদ ইসলামসহ কোটা আন্দোলনের প্রধান ছয় জন সমন্বয়ককে সমর্থককে তুলে নেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বা ডিবি। তাদের কাউকে নেয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসারত অবস্থায়, কাউকে বাসার গেট ভেঙ্গে তুলে আনা হয়েছিল ডিবি কার্যালয়ে।

রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন-অর রশীদ নিশ্চিত করেছেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ সমন্বয়কদের ডিবির হেফাজতে আনা হয়েছে।

এভাবে প্রায় দুইদিন গোয়েন্দা হেফাজতে থাকার পর রোববার রাতে একটি খাবার টেবিলে তাদের সামনে খাবার দিয়ে ছবি তোলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুনুর রশীদ।

একই সময় দুটি ভিডিও করা হয়। সেই ছবি ও ভিডিও মি. রশীদ প্রকাশ করে তার ফেসবুক পেজে।

এই ছবি প্রকাশ করে তিনি তার ফেসবুক পেজে লেখেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই ওদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সাথে কথা বললাম”।

এর কিছুক্ষণ পরেই নাহিদ ইসলামের ভিডিও বার্তার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো।

তার সাথে থাকা অন্য সমন্বয়করা হলেন আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুম।

সারাদিনের সর্বশেষ খবর পেতে  চোখ রাখুন ‘প্রতিদিন খবর’ ওয়েবসাইটে


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন