ক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে শৃঙ্খলা ফিরেছে ময়মনসিংহ ত্রিশালে ব্যস্ততম সড়কগুলোতে। সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দায়িত্বে শৃঙ্খলার সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে খুশি ত্রিশাল বাজারের রিকশাচালক, ইজিবাইক চালকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। কোথাও কাউকে কোনো চাঁদা না দেওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন চালকরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে ত্রিশালের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরজমিনে ত্রিশালের ব্যস্ততম ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, বালিপাড়া মোড়, ত্রিশাল বাসটেনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা হাতে লাঠি নিয়ে বিভিন্ন রুটে যানবাহন চালকদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট ব্যবহারের নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এসব সড়কে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোনো যানজট দেখা যায়নি।
এর আগে, সোমবার শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে থমথমে ছিল গোটা ত্রিশালে। ত্রিশালের সড়কগুলোতে মানুষের চলাচল ছিল একেবারেই কম। অনেক দোকানপাটও ছিল বন্ধ। তবে গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্বাভাবিক প্রাণ ফিরেছে সড়কগুলোতে। নির্বিঘ্নে অফিস ও কর্মস্থলে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ।
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন জানান, আমরা এক থেকে দেড় শতাধিক সদস্য ত্রিশালের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। যানবাহন চালকরা তাদের নির্দেশনা মেনে চলছেন।
তিনি বলেন, দেশটা আমাদের। দেশের এই সংকটময় সময়ে আমাদেরই কাজ করতে হবে। এজন্য আমরা স্ব স্ব উদ্যোগে ত্রিশালে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় নেমেছি।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের সানি নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আগে দেখতাম ত্রিশাল ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে ইজিবাইকচালক, রিকশাচালকদের বাগবিতণ্ডা হত, আমরা রাস্তায় নামার পর আমাদের সঙ্গে তো কারও কোনো ঝামেলা হয়নি। বরং যানবাহন চালকরা আমাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে, আমাদের কাজকে আরও সহযোগিতা করছে।
ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড মোড়ে কথা হয় ইজিবাইকচালক আরিফ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি প্রতিদিন খবর কে বলেন, আগে ট্র্যাফিক পুলিশ আমাদের গাড়িতে লাঠি দিয়ে বাড়ি দিয়ে গ্লাস ভেঙে দিত। একটু কিছু হলেই আমাদের কানে-মুখে চড় দিত। কিন্তু ছাত্ররা যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে আমরা এতে খুশি। আমরা আগে এটাই চাইতাম, কিন্তু এর বদলে আমরা নির্যাতিত হয়েছি।
আরেক রিকশাচালক রফিক বলেন, ত্রিশাল বাজারে বিভিন্ন পয়েন্ট আওয়ামী লীগের নেতারা চাঁদার টোল পয়েন্ট বানিয়েছিল। পাতি নেতাদের দিয়ে চাঁদাবাজি করতো, টাকা যেত বড় বড় নেতাদের পকেটে। শেখ হাসিনা পালানোর পরে নেতারাও পালিয়েছে, চাঁদাবাজরাও পালিয়েছে।
শুধু ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নয় বিগত দিনের দুর্বৃত্তদের নাশকতার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের । সড়কের বিভিন্ন আবর্জনা স্ব স্ব উদ্যোগে পরিষ্কার করছেন তারা।