কাইয়ুম খান, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার। ২০১১ সালে নির্মিত ১৯ বেডের হাসপাতাল ভবনে চলছে ৫০ বেডের কার্যক্রম এমন চিত্র খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। সরেজমিনে দেখা যায়, এখানে গড়ে প্রতিদিন রোগী ভর্তি আছে ৬০ জন, আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ জন। এখানে রয়েছে ডাক্তারদের সেবা প্রদান কক্ষের স্বল্পতা, এক্সরে ও প্যাথলজি রূমের সংকট। প্যাথলজি কোন রকম চালু থাকলেও এক্সরে রুম না থাকায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে এক্সরের কাজ। কয়রা উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা ২ লক্ষ ২৩ হাজার। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছে ১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১টি মাত্র আইলা বিধ্বস্ত উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ভবন সংকট, কক্ষ স্বল্পতার মধ্যেও চালু রয়েছে ওটি ব্যবস্থা। সার্জারি ও মেডিসিনের ডাক্তার আছে। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আরো বেশি নিশ্চিত করতে এখানে একজন কার্ডিওলজি নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। হাসপাতালে রয়েছে জনবলের ব্যাপক সংকট। ১জন মাত্র বাবুর্চি প্রতিদিন ৫০ জনের খাবার রান্না ও পরিবেশন করে থাকে, ১জন মাত্র সুইপার রয়েছে হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার ১জন, রয়েছে লোহার বেড ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্টের স্বল্পতা। কয়রা থেকে খুলনা সদর হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার ফলে উপজেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার সকল সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে উপকৃত হবে উপকূলীয় এ জনপদের বাসিন্দারা। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ডাক্তার মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপজেলা স্বাস্থ্য প, প কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর হাসপাতালের পরিবেশ সংস্কারে আনে আমুল পরিবর্তন । তিনি হাসপাতালে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ ও শোভা বর্ধন কাজে বিশেষ মনোযোগ দেন। কারণ বিগত দিনে ডাক্তার ও নার্সরা এখানে পোস্টিং হলে থাকতে চাইতো না । সেইদিক বিবেচনা করে হাসপাতালের আঙিনা ও পুকুরের চারপাশে নির্মাণ করেন ফুলের বাগান সহ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ ও ওয়াকিং ওয়ে । ফলে রোগির স্বজনরা, ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা এই সৌন্দর্য অবসর সময়ে উপভোগ করে। কক্ষ সল্পতা দূর করতে বিভিন্ন কক্ষের ভিতর অস্থায়ী পার্টিশন করে কক্ষ বাড়িয়ে ডাক্তার ও নার্সদের সেবার পরিবেশ, মাতৃদুগ্ধ কর্নার, রোগীদের অপেক্ষামান বসার জায়গা সহ সেবার পরিবেশ নিশ্চিত করে ।তিনি বলেন এখানে ৫০ বেডের ১টি হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু হয় আবার বন্ধ হয়ে গেছে। ৫০ বেডের হাসপাতাল ভবনটি দ্রুত নির্মাণ হলে ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ করা গেলে এই হাসপাতাল থেকেই এ জনপদের মানুষের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি আরো বলেন এখানে ১ম শ্রেণীর মঞ্জুরীকৃত পদ আছে ২৯ টি জনবল আছে ১২টিতে শূন্য পদ রয়েছে ১৭টি। ২য় শ্রেণীর মঞ্জুরীকৃত পদ ৩০টি জনবল আছে ২৪টিতে শূন্য পদ ৬টি। ৩য় শ্রেণীর মঞ্জুরকৃতপদ আছে ১২৪টি জনবল আছে ৮২ টিতে শুন্য পদ ৪২ টি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাস্থ্য প ,প কর্মকর্তা হিসেবে ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম যোগদানের পর এখানে স্বাস্থ্যসেবার মান ও হাসপাতালের পরিবেশ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো ।এখানে বর্তমানে ডাক্তার ও স্টাফরা সেবার ক্ষেত্রে খুবই আন্তরিক। নতুন ভবন নির্মাণ হলে ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল পেলে স্বাস্থ্যসেবার জন্য আমাদের আর শহরে যেতে হবে না। নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক স্বাস্থ্য প্রকৌশলী খুলনা দুলাল চন্দ্র সরকার এর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।