আঃ কাইয়ুম খান, খুলনাঃ
উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এই জেলার কৃষকেরা, কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায় উপকূলীয় এ জেলার কৃষিতে কাঙ্খিত সাফল্য আসছে না সমন্বয়হীনতার কারণে। তারা বলেন বিভিন্ন ফসলের আবাদের সময় কোন প্রকার সতর্কবার্তা ছাড়াই স্লুইচগেটের কপাট খুলে দেয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে লবণ পানি ঢুকে যায় হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে। বিভিন্ন সময় পানিতে অতিরিক্ত লবন থাকার কারণে জমিতে থাকা বিভিন্ন ফসল ধান ও শাক-সবজির আবাদ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্থানীয় কৃষি বিভাগকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না কৃষকেরা। কৃষি বিপ্লবে এটি একটি বড় অন্তরায় বলে জানান তারা। প্রতিবছর এসব কারণে শত কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়। ইতিমধ্যেই মোল্লারহাট, চিতলমারি, ফকিরহাট ও বাগেরহাট সদর উপজেলা থেকে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বিক্রির জন্য। অন্যদিকে রামপাল ও মংলা উপজেলায় ভেড়িবাঁধ না থাকায় সরনখোলা ও মোড়লগঞ্জ উপজেলায় পুরো বেষ্টনীতে বাঁধ না থাকায় ছোটখাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে যায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসলও শাক-সবজি। ফলে এসব উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভেড়িবাঁধের আওতায় আনার দাবি জানান স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা। বাগেরহাট জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার এর সাথে এ বিষয়ে আলাপ কালে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমন্বয়ের কথা আমি বিভিন্ন সময় উপস্থাপন করেছি। যদি বিভিন্ন স্লুইচগেটের কমিটিতে আমাদের একজন উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সমন্বয় করা যায় তাহলে পানি উঠানো ও নামানোর ক্ষেত্রে কৃষকদের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা হবে এবং কৃষকেরা অনাকাঙ্খিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। কিন্তু বিষয়টির এ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোঃ আল বিরুনীর সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন একটা স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে স্লুইজগেট গুলো পরিচালনা করা হয়। আমাদের জনবলের সংখ্যা খুবই কম যার ফলে শতাধিক গেট সব সময় মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। তবে অনাকাঙ্খিত কারণে কৃষকের ক্ষতি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে কৃষকেরা সরাসরি স্থানীয় প্রশাসন ও আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। যে সকল উপজেলায় বাঁধ নাই অথবা আংশিকভাবে নাই অথবা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ এসব বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপরে সাথে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি আশা করি এ সমস্যার সমাধান খুব শীঘ্রই হবে। বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানের সাথে এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আগামী মাসিক মিটিংয়ে কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।