আঃ হাকিম, বিশেষ প্রতিনিধি
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় কৈয়া বাজার সংলগ্ন বিসমিল্লাহ পোল্ট্রি ফার্ম ২০ বছর যাবত পরিবেশ দূষণ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করলেও কর্তৃপক্ষ এখানে চরম উদাসীন। খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে প্রায় ২০ বছর আগে মহাসড়কের বেশ কিছুটা জায়গা দখল করে গড়ে ওঠে বিসমিল্লাহ পল্ট্রি ফার্ম। ফার্মটি গড়ে উঠার পর থেকেই ফার্মের বর্জের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী ও পথচারীরা। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের খানিকটা জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে বিসমিল্লাহ পোল্ট্রি ফার্ম। বর্তমানে এ খামারে ১৮ হাজার মুরগি রয়েছে। কিন্তু কোন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াই খামারটি চলছে বছরের পর বছর। মহাসড়ক সংলগ্ন বড় একটি পুকুরের মতো গর্ত করে সমস্ত মুরগির বিষ্ঠা ও নানা রকম বর্জ্য পুকুরের মধ্যেই ফেলছে এবং যে সমস্ত মুরগি মরে যায় সেগুলো এই গর্তের ভিতর উন্মুক্তভাবে ফেলছে। ফলে বাতাসে সারাদিনই এলাকাটিতে বিকট দুর্গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। স্থানীয়দের সাথে আলাপ কালে জানা যায় বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন এই খামারে কর্মরত কর্মচারীদের সাথে কথা বললেও কোন ফল হয়নি। গাজী মিজানুর রহমান খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মালিক এছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে তিনি ছিলেন খুলনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স সমিতির সভাপতি। অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার লোকজন তার সাথে কথা বলতে পারে না বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নভাবে জানানোর চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়।
কিছু ইজি বাইক ভ্যানচালক ও বাস চালকদের সাথে কথা বললে জানা যায়, খামারটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ির মধ্যে বমি করে দেয়। স্থানীয়ভাবে আরো জানা যায়, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তার সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোথাও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। খামারে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন বিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় জানিয়েছি। এ বিষয়ে খামারটির মালিক গাজী মিজানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য কর্মরত কর্মচারীদের কাছে ফোন নাম্বার চাইলে তারা বলেন আমাদের কাছে মালিকের নাম্বার নাই। পরবর্তীতে ব্যবস্থাপক হাবিবের নাম্বার দেন। খামারটির ব্যবস্থাপক হাবিবের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি খামারটির পরিবেশ দূষণের কথা স্বীকার করেন। সরকারি জায়গায় দখলের কথাও স্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন খুব অল্প সময়ের মধ্য খামাটি থেকে যেন দুর্গন্ধ না ছড়ায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়রা আরো বলেন কৈয়া বাজারে আপনারা হাজার হাজার মানুষের মাঝে যেকোনো মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করলে এই খামারের ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কথা জানতে পারবেন। এখানে কয়েকটি সেডে ১৮ থেকে ২০ হাজার মুরগি পালন করে। প্রতিনিয়ত তৈরি হয় কয়েক টন বর্জ্য, যা উন্মুক্ত পরিবেশে ফেলার ফলে এলাকার পরিবেশ অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত থাকে। সরকারি জায়গা দখল করে এ ধরনের জনদুর্ভোগের কার্যক্রম দ্রুত বন্ধ করতে সকল রকম প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক খুলনা মোঃ পারভেজ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।