• বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয় : মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ৩
বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয় বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে শাহজানপুর বিএনপির এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নির্বাচন বিলম্ব করা নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। আজকে যখন ভোটের সময়ে আসছে এখন বলেন, এটা না করলে ভোট হবে না, ওটা না করলে ভোট হবে না… কেন রে ভাই? আওয়ামী লীগ তো দেশটাকে বাপের তালুকদারি ভেবেছিল যার কারণে যা-খুশি তাই হয়েছে। আপনারও কি তাই ভাবেন? এই বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়। এই বাংলাদেশ জনগণের। সুতরাং কথাবার্তা বলার সময়ে হিসেব করে বলবেন। যাতে আমাদেরকে বে-হিসাবি কথা বলতে না হয়।

রাজধানীর ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শাহজাহানপুরে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মহানগর নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, অনেকের ভেতরে কিছু লোভী রাজনীতিবিদ আছেন, কিছু লোভী রাজনৈতিক দল আছে যারা শুধু বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করে, কার্যকর কোনো বিরোধিতা নয়। এই দলগুলো পাকিস্তান সৃষ্টির লগ্ন থেকে ভারত বিভক্তি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শুধু বিরোধিতাই করে গেল, দেশপ্রেমের লেশমাত্র তাদের ভেতরে নাই। তারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের মানুষকে ভালোবাসে না। তারা ভালোবাসে যেভাবে হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে, যেভাবেই হোক ক্ষমতায় যেতে হবে। আমাদের তো আপত্তি নেই দেশে যদি ভোটে আপনাদের ক্ষমতায় নেই আপত্তির কি আছে? ভোটে আসেন। ভোটকে ভয় পান কেনো? নির্বাচনকে ভয় পান কেনো?

নির্বাচনের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন আজকে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না, করতে দেয়া যাবে না। তারা বুকে হাত দিয়ে বলেন, এই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আপনাদের ক‘জন নেতা-কর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন? বিএনপির ৪২২ জন নেতা-কর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন শহীদ হয়েছেন এক মাসে। আপনাদের ক‘জন হয়েছে?

গণমাধ্যমের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আজকাল অনেক দলের কথা পত্র-পত্রিকায় লেখে না, অনেক দলের খারাপ কথা লেখে না, ভালো কথা হয়ত লেখে দুই-একটা। আর বিএনপির ভালো কথা লেখে না। খারাপ দুই-একটা লেখে দেয়। তিনি বলেন, একটা কথা আছে না… সব পাখি মাছ খায় দোষ করে মাছরাঙা। এখন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে সহজ। মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব সিলেটি ভাষায় বলতেন… হাড্ডির পাশের মাংস খাইতে খুব মজা লাগে। বিএনপি একটি বড় দল, গুছানো দল, সুন্দর দল। এই দলের বদনাম করতে খুব মজা লাগে মানুষের। বিভিন্ন দল এক যোগে, বিভিন্ন টেলিভিশন এক যোগে, বিভিন্ন ইউটিউবার একযোগে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে কনসার্টেও। এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে আমাদের কাজের মাধ্যমে জনগণের পাশে থেকে তাদের বুঝাতে হবে বিএনপি ছাড়া এদেশে জনগণের কোনো বন্ধু নাই।

চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা সিটির সাবেক এই মেয়র বলেন, আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক বদনাম করতেছে কিন্তু ওই সমস্ত লোকগুলো। অপকর্ম করে তারা, চাঁদাবাজি করে তারা, দুষ্কর্ম করে তারা, চাপিয়ে দেয় বিএনপির ওপরে। এই সমস্ত চাঁদাবাজদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে, প্রতিহত করতে হবে মুখের কথা অথবা কাজে। যদি না করেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব বার বার বলেছেন, যদি জনগণের মন থেকে উঠে যান, আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে তার চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন।

তিনি বলেন, আপনাদের সবার নামে না, দুই-একজনের নামে অভিযোগ আছে। আমরা একটা এলাকায় এক‘শ কর্মী আছে দুইটা কর্মী খারাপ বদমাইশি অপকর্ম করে। যদি হয় আমার ৯৮জন কর্মী তো খারাপ না। সুতরাং দুজন লোকের জন্য আমার সমস্ত কর্মী কালিমা লিপ্ত হবে এটা হতে দেওয়া যাবে না। যদি কোনো চাঁদাবাজ ঢুকে পড়ে কিংবা আসে, অনেক চাঁদাবাজ কিন্তু আওয়ামী লীগ সমর্থকরা এখন দলের মধ্যে আছে। সব দলেই আছে, বিএনপিতে আছে, জামায়াতে আছে এবং অন্যান্য সংগঠনের ঢুকে গেছে তারা, সব দলে কম-বেশি আশ্রয় নিয়ে নিয়েছে। ওই সমস্তদের চিহ্নিত করেন, চিহ্নিত করে ওদের দল থেকে বের করে দেন অথবা পুলিশকে সোপর্দ করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ওরা ঢুকতে পারে কিন্তু চিহ্নিত করে একটা একটা করে দল থেকে বের করে দেবেন, দলে ওদের অবস্থান হবেনা। বিএনপিতে কোনো অপকর্মকারী, কোনো দুষ্কৃতকারী, কোনো চাঁদাবাজির জায়গায় বিএনপিতে নাই, হবে না। কেন খারাপ লোকের জায়গা বিএনপিতে হবে না, এই কথা মনে রাখবেন।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন