ঢাকা ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জামায়াত এখন জিয়াউর রহমানের বিএনপির মতোই জনপ্রিয়: তাহের Logo বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সেনা ঘাঁটি ও সেনা স্টেশন করলো ভারত Logo “বিপাশার রাজনীতিতে নতুন খেলা ইলিয়াস মোল্লার তাল ফেলে সেলিম ভূঁইয়ার বিটে নাচ” Logo মিত্রদের ৪০ আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি, চলছে দরকষাকষি Logo আরপিও সংশোধন পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে: ইসি সচিব Logo গলাচিপায় ‘ভিপি নুর নাকি হাসান মামুন’ বিতর্কে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ১৫ Logo নিষিদ্ধ আ.লীগ ৪ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে: গোলাম মাওলা রনি Logo বিপাশার রাজনীতিতে নতুন খেলা Logo নতুন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই ব্যবসা চলবে না : ডাকসু ভিপি Logo বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ চারটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে: রনি

আওয়ামী ঘরানা থেকে বিএনপি সৈনিক—খুলনা মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালের ক্যাশিয়ার আলিমুজ্জামানের রহস্যময় রূপান্তর। খুলনা প্রতিনিধি…………

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • ২২৮ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী ঘরানা থেকে বিএনপি সৈনিক—খুলনা মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালের ক্যাশিয়ার আলিমুজ্জামানের রহস্যময় রূপান্তর।ছবি: প্রতিদিন খবর

খুলনা প্রতিনিধি…………

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ক্যাশিয়ার মো. আলিমুজ্জামান যেন এক রাজনৈতিক রূপবদলের জীবন্ত উদাহরণ। একসময় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী এই কর্মকর্তা এখন নিজেকে দাবি করছেন শহীদ জিয়ার সৈনিক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের অংশীদার! তবে রাজনৈতিক মুখোশ বদলের আড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের পাহাড়সম অভিযোগ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে খুমেকে যোগদানের পর থেকেই আলিমুজ্জামান আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। ২২ এপ্রিল ওই বছর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াতের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাঁকে ক্যাশিয়ারের পাশাপাশি ওয়ার্ড মাস্টারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সুযোগে তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি প্রভাব খাটাতে শুরু করেন।

রাজনৈতিক পালাবদলের পর আলিমুজ্জামান আবারও পাল্টে ফেলেন নিজের পরিচয়। এখন তিনি নিজেকে বিএনপির শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী ‘পোড়খাওয়া সৈনিক’ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন এবং বিএনপির বিভিন্ন স্থানীয় কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়া বদলালেও আলিমুজ্জামানের দুর্নীতি থামেনি। হাসপাতালের লাশের স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, ঠিকাদারি কাজের বিল আটকে ঘুষ আদায়, রোস্টার বাণিজ্য, প্যাথলজি সিন্ডিকেটে জড়িত থাকা—এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। খুলনায় একাধিক ফ্ল্যাট ও তিনতলা বাড়ি তাঁর মালিকানায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন  ঘোড়াশালে রেললাইনে বিভৎস দৃশ্য: মাথা বিচ্ছিন্ন অজ্ঞাত যুবকের ম/র/দেহ উদ্ধার

২০২৩ সালের শেষের দিকে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হলেও, প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় তিনি দ্রুতই আবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি আগের মতোই প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালের রাজস্ব, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও কর্মচারী বদলির ওপর একচ্ছত্র দখল বজায় রেখেছেন।

হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অভিযোগ, আলিমুজ্জামান প্রশাসনিক প্রভাব ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দেন। ফলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।

সরকারি বিধি অনুযায়ী একই ব্যক্তি দুটি পদে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে না পারলেও, আলিমুজ্জামান এখনও ক্যাশিয়ার ও ওয়ার্ড মাস্টার—দুই দায়িত্বই পালন করছেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক সুজিত আহমেদ তাঁকে মূল পদে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।

এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁরা দ্রুত তদন্ত ও আলিমুজ্জামানের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মীদের মতে, “আলিমুজ্জামান এখন আর শুধু ক্যাশিয়ার নন, তিনি ক্ষমতার এক ছায়াশাসক।”

ট্যাগস :

জামায়াত এখন জিয়াউর রহমানের বিএনপির মতোই জনপ্রিয়: তাহের

আওয়ামী ঘরানা থেকে বিএনপি সৈনিক—খুলনা মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালের ক্যাশিয়ার আলিমুজ্জামানের রহস্যময় রূপান্তর। খুলনা প্রতিনিধি…………

আপডেট সময় : ০২:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

খুলনা প্রতিনিধি…………

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ক্যাশিয়ার মো. আলিমুজ্জামান যেন এক রাজনৈতিক রূপবদলের জীবন্ত উদাহরণ। একসময় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী এই কর্মকর্তা এখন নিজেকে দাবি করছেন শহীদ জিয়ার সৈনিক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের অংশীদার! তবে রাজনৈতিক মুখোশ বদলের আড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের পাহাড়সম অভিযোগ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে খুমেকে যোগদানের পর থেকেই আলিমুজ্জামান আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। ২২ এপ্রিল ওই বছর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াতের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাঁকে ক্যাশিয়ারের পাশাপাশি ওয়ার্ড মাস্টারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সুযোগে তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি প্রভাব খাটাতে শুরু করেন।

রাজনৈতিক পালাবদলের পর আলিমুজ্জামান আবারও পাল্টে ফেলেন নিজের পরিচয়। এখন তিনি নিজেকে বিএনপির শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী ‘পোড়খাওয়া সৈনিক’ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন এবং বিএনপির বিভিন্ন স্থানীয় কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়া বদলালেও আলিমুজ্জামানের দুর্নীতি থামেনি। হাসপাতালের লাশের স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, ঠিকাদারি কাজের বিল আটকে ঘুষ আদায়, রোস্টার বাণিজ্য, প্যাথলজি সিন্ডিকেটে জড়িত থাকা—এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। খুলনায় একাধিক ফ্ল্যাট ও তিনতলা বাড়ি তাঁর মালিকানায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন  প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকার : দুই জেলের কারাদণ্ড

২০২৩ সালের শেষের দিকে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হলেও, প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় তিনি দ্রুতই আবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি আগের মতোই প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালের রাজস্ব, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও কর্মচারী বদলির ওপর একচ্ছত্র দখল বজায় রেখেছেন।

হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অভিযোগ, আলিমুজ্জামান প্রশাসনিক প্রভাব ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দেন। ফলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।

সরকারি বিধি অনুযায়ী একই ব্যক্তি দুটি পদে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে না পারলেও, আলিমুজ্জামান এখনও ক্যাশিয়ার ও ওয়ার্ড মাস্টার—দুই দায়িত্বই পালন করছেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক সুজিত আহমেদ তাঁকে মূল পদে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।

এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁরা দ্রুত তদন্ত ও আলিমুজ্জামানের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মীদের মতে, “আলিমুজ্জামান এখন আর শুধু ক্যাশিয়ার নন, তিনি ক্ষমতার এক ছায়াশাসক।”