
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের অভিযোগ এনে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ৫০ কোটিটাকার মানহানি মামলা করেছেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার।
রোববার (২৬ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–৫–এ মামলাটির আবেদনকরেন তিনি।
আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে কাশিমপুর থানা পুলিশকে তদন্ত করেব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান শওকত হোসেন সরকার।
ব্রিফিংয়ে শওকত হোসেন সরকার উল্লেখ করেন, তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিতচাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। রাজনৈতিকভাবে তাকে ঘায়েল করার জন্যই এই কুৎসা রটানো হয়েছে। তার সাফল্য ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহলেরষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে চাঁদাবাজ উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারচালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ওমরা পালন শেষে দেশে ফেরার পর জানতে পারেন, ২৩ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে জড়িয়ে ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে নেতার চরিত্রহননের উদ্দেশ্যে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
শওকত সরকার বলেন, ‘প্রতিবেদনে যার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, তিনি আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। ভিডিওতে দেখা গেছে, আফজাল হোসেন আমাকে টাকা দিচ্ছেন। টাকা দিচ্ছেন এটিসত্য। তবে ওই টাকা কোনো চাঁদাবাজির নয়, বরং গাড়ি বিক্রির টাকা।’
তিনি জানান, ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই আফজাল হোসেন তার ছেলের প্রতিষ্ঠান ‘এসএস কারসাম্রাজ্য’ থেকে একটি নোয়া স্কয়ার গাড়ি ক্রয় করেন। ৪০ লাখ টাকার ওই গাড়ি ১০ লাখ টাকার চেকজামানত রেখে হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি ব্যাংক ঋণ নিয়ে ধাপে ধাপে বাকি টাকা পরিশোধ করেন।কিন্তু আফজাল হোসেন সেই টাকা দেওয়ার সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে বিকৃতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি দাবি করেন, আফজাল হোসেন অতীতে নিজেকে গাজীপুর মহানগর যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। জুলাই আন্দোলনের পর তিনি ভোল বদলে বিলুপ্ত ‘জিয়া মঞ্চ’-এর নেতা দাবি করছেন।আসলে তিনি সবসময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের মিথ্যা অপপ্রচারের কারণে তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক ওপারিবারিকভাবে হেয় ও সম্মানহানির শিকার হয়েছেন। এ কারণে ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলাদায়ের করেছেন। আদালতের মাধ্যম তিনি ন্যায় বিচার পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।
কাশিমপুর জমিদার বাড়ি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে শওকত সরকার বলেন, ‘এই অভিযোগও মিথ্যা।২০০৫ সালে আমি ওই বাড়ির অর্ধেক অংশ ক্রয় করি। ২০২৩ সালে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় সরকারপক্ষ সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি। নতুন বিএস জরিপে আমার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ওইজমির আমি আইনানুগ মালিক।’
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানা নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আমার বিরুদ্ধে ৪২টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। আমি কারাভোগ করেছি, নির্যাতন সহ্য করেছি, কিন্তু জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে এক বিন্দু পিছু হটিনি। আজও সেই পথেই আছি।’
ব্রিফিংকালে শওকত হোসেন সরকারের আইনজীবী আব্দুস সালামসহ মহানগর বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

























