
বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলায় সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণে বড় ধরণের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দুঃস্থ ও এতিম শিশুদের জন্য প্রেরিত এই মাংসে ভাগ বসিয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও স্থানীয় কিছু সাংবাদিক—এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে এই মাংস বিতরণ করা হয়। জানা গেছে, শরণখোলায় মোট ১০ কার্টন দুম্বার মাংস আসে। প্রতিটি কার্টনে ১০ প্যাকেট করে থাকার কথা—অর্থাৎ মোট ১০০ প্যাকেট। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) থেকে শরণখোলা প্রেসক্লাবে সরবরাহ করা তালিকা অনুযায়ী, ২৯টি মাদরাসায় দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫০ প্যাকেট। বাকি ৫০ প্যাকেটের কোনো হদিস মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক-এর প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ আলী, প্রেসক্লাবের আরেক সভাপতি ও মানবজমিন-এর প্রতিনিধি আব্দুল মালেক রেজা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন মিলন, এবং জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম কবিরসহ কয়েকজন এই বিতরণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।
শরণখোলার বাসিন্দা হুমায়ূন কবির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন,
“মাংস কোথায়? শরণখোলায় এক আওয়ামী দোসর তেলবাজ সাংবাদিকের বাসায় ৫ কার্টন আর ইসলামী দলের প্রধানের বাসায় ১০ কার্টন দুম্বার মাংস গেল কীভাবে?”
তথ্যদাতারা রাজনৈতিক প্রতিশোধের ভয়ে পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা পিআইও মো. সোহাগ আকন বলেন, “সব কার্টনে সমানসংখ্যক প্যাকেট ছিল না। কোনো কোনো কার্টনে ৭ বা ৮টি প্যাকেট ছিল।”
তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, সৌদি সরকারের পাঠানো আন্তর্জাতিকভাবে সিল করা কার্টনে প্যাকেটসংখ্যা কম–বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? সচেতন মহলের দাবি, সরকারি তত্ত্বাবধানে বিদেশি সহায়তার বণ্টনে এমন অসঙ্গতি প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়। তারা এই মাংস বিতরণের পুরো প্রক্রিয়া তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাবিবুল্লাহ বলেন,
“আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিএনপি নেতা বেল্লাল হোসেন মিলন, জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম কবির ও সাংবাদিক শেখ মোহাম্মদ আলীকে পাওয়া যায়নি।























