ঢাকা ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জামায়াত এখন জিয়াউর রহমানের বিএনপির মতোই জনপ্রিয়: তাহের Logo বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সেনা ঘাঁটি ও সেনা স্টেশন করলো ভারত Logo “বিপাশার রাজনীতিতে নতুন খেলা ইলিয়াস মোল্লার তাল ফেলে সেলিম ভূঁইয়ার বিটে নাচ” Logo মিত্রদের ৪০ আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি, চলছে দরকষাকষি Logo আরপিও সংশোধন পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে: ইসি সচিব Logo গলাচিপায় ‘ভিপি নুর নাকি হাসান মামুন’ বিতর্কে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ১৫ Logo নিষিদ্ধ আ.লীগ ৪ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে: গোলাম মাওলা রনি Logo বিপাশার রাজনীতিতে নতুন খেলা Logo নতুন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই ব্যবসা চলবে না : ডাকসু ভিপি Logo বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ চারটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে: রনি

ভয়ঙ্কর রূপে তিস্তা, ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৪৪টি জলকপাট খোলা রেখেও রাতে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এতে হুমকিতে পড়ে ফ্লাড বাইপাস সড়কটি। আতঙ্কিত হয়ে নির্ঘুম রাত কাটায় তিস্তাবাসী। জেলার ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে টানা ১৫ ঘণ্টা পর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সোমবার (০৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একই পয়েন্টে পানি কমে দুপুর ১২টা থেকে বিপৎসীমা ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যায়। এরপর বিকেল ৩টায় ২০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে আর কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে রোববার (০৫ অক্টোবর) রাত ১টায় একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সরেজমিনে জানা গেছে, ভাটিতে থাকা চার উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে উজানে থাকা ফ্লাড বাইপাসসহ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। রাত গভীরে নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। এদিকে উজানের ঢল আসায় নদী তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে রাতে মাইকিং করে পাউবো। হুমকির মুখে পড়ে ডালিয়া এলাকার ফ্লাড বাইপাস ও ভাটিতে থাকা ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। বেশ কিছু এলাকায় ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলের ক্ষতিসহ গবাদি পশুপাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্লাবিত এলাকার মানুষজন।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন, মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর এবং নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন  ছদ্মবেশ দুদক কর্মকর্তারা সাব-রেজিস্টার অফিসে ,অতঃপর...

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, রোববার সকাল ৯টা থেকে দেশের অভ্যন্তরে ও উজানের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে নদীর পানি। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষকে অগ্রিম জানানো হয়েছে যেন তারা প্রস্তুত থাকে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে রোপা আমন, চিনা বাদাম ও শাকসবজির চাষ হচ্ছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের ক্ষতি যেন কম হয়।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। শিগগিরই সরকারি সহায়তা প্রদান শুরু হবে।

ট্যাগস :

জামায়াত এখন জিয়াউর রহমানের বিএনপির মতোই জনপ্রিয়: তাহের

ভয়ঙ্কর রূপে তিস্তা, ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি

আপডেট সময় : ০২:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৪৪টি জলকপাট খোলা রেখেও রাতে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এতে হুমকিতে পড়ে ফ্লাড বাইপাস সড়কটি। আতঙ্কিত হয়ে নির্ঘুম রাত কাটায় তিস্তাবাসী। জেলার ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে টানা ১৫ ঘণ্টা পর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সোমবার (০৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একই পয়েন্টে পানি কমে দুপুর ১২টা থেকে বিপৎসীমা ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যায়। এরপর বিকেল ৩টায় ২০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে আর কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে রোববার (০৫ অক্টোবর) রাত ১টায় একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সরেজমিনে জানা গেছে, ভাটিতে থাকা চার উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে উজানে থাকা ফ্লাড বাইপাসসহ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। রাত গভীরে নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। এদিকে উজানের ঢল আসায় নদী তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে রাতে মাইকিং করে পাউবো। হুমকির মুখে পড়ে ডালিয়া এলাকার ফ্লাড বাইপাস ও ভাটিতে থাকা ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। বেশ কিছু এলাকায় ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলের ক্ষতিসহ গবাদি পশুপাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্লাবিত এলাকার মানুষজন।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন, মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর এবং নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন  কিশোরীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, রোববার সকাল ৯টা থেকে দেশের অভ্যন্তরে ও উজানের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে নদীর পানি। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষকে অগ্রিম জানানো হয়েছে যেন তারা প্রস্তুত থাকে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে রোপা আমন, চিনা বাদাম ও শাকসবজির চাষ হচ্ছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের ক্ষতি যেন কম হয়।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। শিগগিরই সরকারি সহায়তা প্রদান শুরু হবে।